মাছ-মাংসেও অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যাচ্ছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশে অসংখ্য রোগে এখন অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। কারণ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই যে কেউ চাইলেই দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেতে পারছেন। এমনকি, সব ধরনের মাছ-মাংসতেও অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত ‌‌অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার রোধে করণীয় শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্যেও অ্যান্টিবায়োটিক চলে এসেছে। অর্থাৎ আমরা যে মাছ, মুরগি, গরু, খাসি বা অন্যান্য যেসব মাংস খাই, সেগুলোতেও অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হলো, এসব মাছ ও পশু-পাখিদের জন্য যে খাবার (ফিড) তৈরি করা হয়, সেগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এসব খাবারে এখন অহরহ অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যাচ্ছে। যেসব প্রাণী এ খাবার খাচ্ছে ও সেই প্রাণীগুলো যখন মানুষের খাদ্য হিসেবে আসছে, তখন এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আমাদেরকে না চাইতেও সেবন করতে হচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের যে কারণগুলো রয়েছে, এরমধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমরা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক কিনে সেবন করি। এমনকি আমরা যখন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করি আমরা পুরো কোর্স সম্পন্ন করি না। যখনই দু’চারটা ওষুধ খেয়ে একটু আরাম পাই, তখনই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও প্রেসক্রিপশন ছাড়া এভাবে ওষুধ বিক্রি হয় না। কিন্তু আমাদের দেশের ফার্মেসিগুলোতে যেকোনো একটা ব্যক্তি গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক চাইলেই তাকে দিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়।

মন্ত্রী আরও বলেন, আরেকটি বিষয় দেখেছি, যে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই সেটি ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। যেখানে অল্প ক্ষমতার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেই কাজ হয়, সেখানে আমরা ব্যবহার করছি হাই পাওয়ারফুল অ্যান্টিবায়োটিক।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা চাই কোনো ফার্মেসি যাতে বিনা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করে। জনগণকে সচেতন করার জন্য, চেনার জন্য, বোঝার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের মোড়কের মধ্যে লাল রং দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফসহ আরও অনেকে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ