বিশ্ববাজারে কমল তেলের দাম

চীন এবং জাপানে জুলাই মাসে উৎপাদন কমে যাওয়ার তথ্য প্রকাশের পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে। তেলের সরবরাহ সামঞ্জস্য নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের সাথে অন্যান্য উৎপাদনকারীদের চলতি সপ্তাহে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। তাদের এই বৈঠকের আগে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমল বলে সোমবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

রয়টার্স বলছে, সোমবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১০৩.১৫ ডলার হয়েছে। এছাড়া ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে এখন ৯৭ দশমিক ৪৪ ডলারে নেমেছে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রুড তেলের আমদানিকারক চীনে গত জুন মাসে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লকডাউন ঘোষণা করায় পরের মাসে তা কমে যায়।

কাইক্সিন/মার্কিটের ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্সে (পিএমআই) গত জুনে চীনের পয়েন্ট ৫১ দশমিক ৭ থাকলেও জুলাইয়ে তা কমে ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ হয়। সোমবার প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই সূচকে প্রত্যাশিত পয়েন্টের তুলনায় অনেক কম পয়েন্ট পেয়েছে চীন।

পরিসংখ্যানে গত ১০ মাসের মধ্যে জুলাইয়ে জাপানেও উৎপাদন সবচেয়ে কম হয়েছে বলে দেখা গেছে। আর্থিক সেবা সংস্থা সিএমসির বিশ্লেষক টিনা টেং বলেছেন, চীনের হতাশাজনক উৎপাদনের পিএমআই সূচক আজকের তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রাথমিক কারণ।

তিনি বলেন, তথ্য-উপাত্তে চীনে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের আশ্চর্যজনক সংকোচন দেখা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির পুনরুদ্ধার কার্যক্রম প্রত্যাশা অনুযায়ী ইতিবাচক না-ও হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। আর এর ফলে বৈশ্বিক অপরিশোধিত তেলের বাজারে চাহিদা কমে গেছে।

এদিকে, ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো টানা দুই মাস জুন এবং জুলাইয়ে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট এবং ডব্লিউটিআই তেলের দাম কমেছে। বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং উচ্চ সুদ হারে মন্দার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় জ্বালানির চাহিদা কমেছে।

এএনজেড বিশ্লেষকরা বলেছেন, ব্রিটেনে চালকদের কাছে জ্বালানি বিক্রি হ্রাস পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের এই সময়ে দেশটিতে পেট্রলের গড় চাহিদাও গত পাঁচ বছরের তুলনায় কমে গেছে।

বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক এবং রাশিয়াসহ অন্যান্য মিত্ররা, যারা ওপেকপ্ল্যাস নামে পরিচিত তাদের মধ্যে বুধবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের জ্বালানির উৎপাদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তারা ওই বৈঠক করবেন।

ওপেক এবং ওপেকপ্ল্যাসের এই বৈঠক এমন সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যার মাত্র কয়েক দিন আগে সৌদি আরব সফর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আরবিসি ক্যাপিটালের বিশ্লেষক হেলিমা ক্রফ্ট এক নোটে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সৌদি আরব সফরের পর তাৎক্ষণিক তেলের সরবরাহ শুরু করা সম্ভব না হলেও আমরা বিশ্বাস করি, সৌদি আরব ক্রমান্বয়ে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করবে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ