‘পাঙাশ-তেলাপিয়া কিনতেও হিসাব করতে হচ্ছে’

গত কয়েক মাস ধরে মাছ বাজারে সেই বাড়তি দাম এখনও চলমান রয়েছে। ফলে মাছ কেনা সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। মাছের বাড়তি দামের কারণে এখন পাঙাশ-তেলাপিয়া কিনতেও ক্রেতাদের হিসাব করতে হচ্ছে।

রাজধানীর শাহজাদপুর ও বাড্ডার মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, রুই ৩৫০-৩৮০ টাকা, পাঙাশ ২০০ টাকা, কাচকি মাছ ৩৫০ টাকা, চিংড়ি আকার অনুযায়ী ৬০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা ও তেলাপিয়া মাছ ২৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, ছোট বোয়াল ৬০০, বাইম মাছ ৭০০ টাকা ও রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাছের বাজার এখন উচ্চবিত্ত মানুষের বাজার। মাছের দাম দিন দিন যে হারে বাড়ছে তাতে আর কিছু দিন পর নিম্ন আয়ের মানুষ মাছের বাজারে যেতে সাহস করবে না। মাছ কেনা সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। এক সময় পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ ছিল গরিবের মাছ, কিন্তু এখন এই দুই মাছের কেজি পৌঁছেছে ২০০ টাকায়। এই মাছ কিনতেও এখন হিসাব করতে হচ্ছে।

শাহজাদপুর কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা মো. শামীম বলেন, আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ। তাই আমরা মাছ বাজারে পাঙাশ ও তেলাপিয়ার মতো মাছ সাধারণত কিনে থাকি। কিন্তু বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী সেই সব মাছ কেনার সক্ষমতা হারাচ্ছি। এভাবে মাছের দাম বাড়তে থাকলে গরু ও খাসির মাংসের মতো মাছ খাওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে আমাদের।

বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা মো. ইমরানকে মাছের বাজার দরে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গত ২-৩ মাস ধরে মাছের দাম নাগালের ক্রয় ক্ষমতার চলে যাচ্ছে। বর্তমান অবস্থায় পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাছসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এভাবে চলতে থাকলে খাদ্য তালিকা থেকে মাছের নাম বাদ দিতে হবে।
অন্যদিকে বিক্রেতারা মাছের বাজারে ক্রেতাদের অস্বস্তির বিষয়ে বলছেন, মাছের খাবারের দাম যখন থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে তখন থেকেই মাছের দাম বাড়তি। এছাড়া নানা কারণে মাছের পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে এর প্রভাব মাছেও পড়েছে। এছাড়া গত কয়েক দিনের গরমের কারণে মাছ চাষিরা চাষ করা মাছ বাজারে কম এনেছেন। ফলে বাজারে মাছের সংকট সৃষ্টি হওয়ার দাম বেড়েছে।

মাছের দাম নিয়ে শাহজাদপুর মাছ বাজারের খুচরা বিক্রেতা সিদ্দিক হোসেন বলেন, ক্রেতারা মনে করে আমরা ইচ্ছা করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করি। কিন্তু এটা সত্য না। মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কেজি প্রতি। এই দামের প্রভাব সরাসরি খুচরা বাজারেও পড়ে। আমরা তো তাদের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনে এনে বিক্রি করছি। তাই তো দাম বেশি।

এদিকে বাড্ডা কাঁচাবাজারে মাছ বিক্রিতে দুলাল মিয়া বলেন, টানা গরমের কারণে চাষিরা মাছ পুকুর বা প্রেজেক্ট থেকে কম তুলেছেন। গরমে মাছ সংরক্ষণ ও পরিবহনে অনেক সমস্যা হয়। এর ফলে বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম, তাই দামও বাড়তি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ