নাসার বিজ্ঞানীরা শনি উপগ্রহে ‘শক্তির উৎস’ খুঁজে পেলেন

শনি উপগ্রহে খুঁজে পাওয়া গেল প্রাণ এবং শক্তির অন্যতম উৎস!তেমনটাই জানিয়েছেন, নাসার বিজ্ঞানীরা। গত বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি শনির বরফে ঢাকা ‘চাঁদ’ এনসেলাডাসে এমন এক জিনিস তারা খুঁজে পেয়েছেন, যা মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম মূল উপাদান। পাশাপাশি, সেই উপাদান ‘শক্তির উৎস’ বলেও উল্লেখ করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের ‘ক্যাসিনি’ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল, শনির বরফের উপগ্রহ নিয়ে গবেষণা চালানো। সেই অভিযান চলাকালীনই বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের খোঁজ পেয়েছেন বলে দাবি নাসার। কিন্তু সেই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কী? নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ সেই উপাদান হল হাইড্রোজেন সায়ানাইড। যাকে তাঁরা ‘জীবনের উৎপত্তির অন্যতম চাবিকাঠি’ বলে দাবি করছেন।

পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা আগেই জানতে পেরেছিলেন যে, এনসেলাডাসের মধ্যে জলীয় বাষ্প এবং বরফের বিশাল ভান্ডার জৈব যৌগে সমৃদ্ধ। যার মধ্যে প্রাণের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকতে পারে বলেও অনুমান নাসার। এই বছরের ৫ তুরুপের তাস!কিন্তু এখন গবেষকরা গবেষণা আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। নাসার ক্যাসিনি অভিযানের তথ্য বিশ্লেষণ করে নাসার বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন যে এনসেলাডাসে রয়েছে হাইড্রোজেন সায়ানাইডের অণু। যা পৃথিবীতে প্রাণ সঞ্চারের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে ধরা হয়।

বিজ্ঞানীরা আরও নিশ্চিত করেছেন যে, বরফের চাঁদের একেবারে বাইরের যে অংশ, তার নীচে থাকা মহাসাগরে রাসায়নিক শক্তির একটি বিশাল উৎস রয়েছে। ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী, যা মনে করা হয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি রাসায়নিক শক্তি থাকতে পারে এনসেলাডাসে। যত বেশি শক্তি পাওয়া যায়, প্রাণ সঞ্চারের সম্ভাবনা তত বেশি বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

এই প্রসঙ্গে গবেষক জোনা পিটার একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, আমাদের কাজে উঠে এসেছে যে, এনসেলাডাসে এমন অণু রয়েছে যা, প্রাণ সঞ্চার করার এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই জীবন টিকিয়ে রাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।এনসেলাডাসে কেবল বাসযোগ্য পরিবেশের মৌলিক উপাদান রয়েছে তা-ই নয়, কী ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জটিল জৈব অণু তৈরি হতে পারে, তার-ও ধারণা তৈরি হয়েছে।

এই নতুন গবেষণা মহাকাশে মিথেন খুঁজে পাওয়ার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।বিজ্ঞানীরা এ-ও মনে করছেন যে, অনেক রাসায়নিক পথ রয়েছে যা এনসেলাডাসের মহাসাগরে প্রাণ সঞ্চার করতে পারে।

যদিও পুরো বিষয়টি নির্ভর করা আছে নাসার বিজ্ঞানীদের গবেষণা এবং ধারণার উপর ভিত্তি করে। শনির উপগ্রহে হাইড্রোজেন সায়ানাইড খুঁজে পাওয়ার কোনও প্রামাণ্য নথি এখনও নাসার হাতে আসেনি। এর আগে ২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা এনসেলাডাসে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন এবং হাইড্রোজেনের উপস্থিতির কথা অনুমান করেছিলেন।
সূত্র: আনন্দবাজার

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ