অযত্ন অবহেলায় আক্কেলপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার

:: আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি ::

অযত্ন-অবহেলায় ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার পৌর এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের একটি স্তম্ভ।শহীদ মিনারটি দেখভালের কেউ নাই।কাপড় শুকাতে দেওয়া হচ্ছে মিনারের স্তম্ভ এবং সীমানা প্রাচীরের ওপর।প্রবেশপথের বেদী নোংর, সেখানে ঘুটে শুকাতে দিচ্ছেন স্থানীয়রা।ভেতরে বখাটে যুবকদের আড্ডা বসে।এমন চিত্র দেখা গেছে আক্কেলপুর রেল স্টেশনের উত্তর পাশের ওই উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শহীদ মিনার কমপ্লেক্সটি স্থাপিত হয় ২০১১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালিন উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক বাবলু এবং ২০১১ সালের ১ জুলাই এর উদ্বোধন করেন দেশ বরেণ্য ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন। এই দুই বছরের মধ্যেই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে সরেজমিনে দেখা গেছে।জানা গেছে শহীদ মিনারটি তৈরি হয়েছিল মাটির গাধুনির ওপরে সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে।ফলে সেখানে খেলাধুলারত শিশুদের সামান্য আঘাতেই তা ভেঙে যায়।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি আসতে আর মাত্র ১৬ দিন বাকি।এরই মধ্যে মান সম্পন্ন নতুন শহীদ মিনার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন সচেতন মহল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে শহীদ মিনারের ডান পাশের স্তম্ভটি। অপর দুটি স্তম্ভের উপরে কাপড় শুকাতে দিয়েছেন স্থানীয়রা। মিনারের পাশে বাঁশে দড়ি বেধেও শুকানো হচ্ছে কাপড়।কাপড় শুকানো হচ্ছে শহীদ মিনার চত্বরের সীমানা প্রাচীরে।প্রবেশ দ্বারে দেখা গেছে শুকাতে দেওয়া আছে গোবর।দেওয়ালের সাথে রাখা আছে পায়খানার ভাঙ্গা প্যান স্লাব।অপরিচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে ভিতরের প্রাঙ্গন,বিবর্ণ হয়েছে রয়েছে শহীদ মিনারের স্তম্ভ ও দেওয়ালের রং।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২৫ দিন আগে ভেঙ্গে গেছে শহীদ মিনারের ওই স্তম্ভটি। বছরের অন্যান্য সময়ে শহীদ মিনারটি অযত্ন আর অবহেলায় ও অরক্ষিত থাকে,শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি,২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর আসলেই পরিপাটি করা হয়।

স্থানীয় এক নারী বলেন, স্তম্ভটি ভাঙ্গার পর দেখা গেছে শহীদ মিনারের স্তম্ভের ভেতরের গাথুনি মাটির মিশ্রণ দিয়ে করা।বাচ্চারা ভেতরে খেলাধুলা করে।খেলার সময় হয়ত এটি ভেঙ্গে গেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ মন্টু বলেন, এই শহীদ মিনারের বিষয়ে একাধিকবার উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে।কিন্তু কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এখানে উন্নত ও স্থায়ী শহীদ মিনার হওয়া উচিত।

বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান কবিরাজ বলেন, শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে আছে তা আমার জানা নেই। সদিচ্ছা,অসেচতনতা ও অবহেলার কারণে শহীদ মিনারটির এই অবস্থা।শহীদ মিনারের বিষয়ে স্থায়ী একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি সহ সকলের নজরদারি রাখা প্রয়োজন।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক বাবলু বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির দ্রুত সংস্কার ও ভালো মানের একটি নকশা করে স্থায়ীভাবে করা উচিত। পাশাপাশি যথাযথ তদারকি করা প্রয়োজন।

আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুল আলম চৌধুরী বলেন,এবছর ২১ ফেব্রুয়ারি এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সংস্কার করে উদযাপন করা হবে। স্থায়ীভাবে নতুন করে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য জেলা পরিষদের নিকট টেন্ডার আহব্বান করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। টেন্ডার পাশ হলে নতুনভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ হবে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ