সংকটে আশার নাম হানিফ

:: কুবি প্রতিনিধি ::

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে যেখানে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে চাকরি, উচ্চতর ডিগ্রি বা পরিবার নিয়ে। কেউ কেউ হয়তো ব্যস্ততার ফাঁকে দুই একবার আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের বিদ্যাপীঠ ঘুরে দেখার জন্য। কিন্তু এর ব্যতিক্রম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ সেশনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম হানিফ। চাকরী জীবনে গিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি, চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহসহ নিজ উদ্যোগে নানা সাহায্য করেছেন তিনি।

২০২১-২২ সেশনে স্নাতকের ১৩ জন এবং স্নাতকোত্তরের ৩ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির ফি দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি। তাছাড়াও বেশ কয়েকজনকে সেমিস্টার ফি, চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। সব মিলিয়ে তিনি ফেব্রুয়ারী মাসে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার সহযোগিতা করেছেন।

এই ব্যাপারে মাজহারুল ইসলাম হানিফ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তার ইচ্ছে ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করা, সেসময় থেকেই তিনি নানাভাবে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করতেন। তার এই চিন্তা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে চাকরী জীবনে যাবার ৫ বছর পরেও শিক্ষার্থীদের জন্য স্বার্থহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অর্থের সংগ্রহ এবং এর উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের থেকে তিনি এই অর্থ সংগ্রহ করেন। অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি তার পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ছাড়াও চাকরির সুবাদে পরিচয় এমন লোকদের সাথেও যোগাযোগ করেন।

শিক্ষার্থীদের এই সহযোগিতা করার ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একটি সংগঠন খুলে সেটির মাধ্যমে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন। কারণ চাকরি সামলিয়েও তার এই কাজ করে যাবার উদ্দেশ্য একটাই যেন আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী ছিটকে না পরে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসান কামরুল বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিবার। এখানে প্রতিটা শিক্ষার্থী আমি মনে করি পরিবারের সদস্য। একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসবে সেটাই নিয়ম হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে হানিফসহ অনেকেই শিক্ষার্থীদের বিপদে এগিয়ে আসছে, সহযোগিতা করছে এটা অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। তবে এটার জন্য প্ল্যাটফর্ম জরুরি। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করলে ফান্ড তৈরি হবে, সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হবে। এতে সহযোগিতা করা আরও সহজ হবে।

মাজহারুল ইসলাম হানিফকে অভিবাদন জানিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, ২০২২-২৩ সালে এই প্রতিযোগিতার সময়ে এসে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার জন্য একটা শক্তি প্রয়োজন, যেটা হানিফের আছে। তার এই উদ্যোগ আর চিন্তাকে আমি সাধুবাদ জানাই।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ