যেভাবে ১৬ বছরের প্রেমিকাকে ধর্ষণ-হত্যা করেন ষাটোর্ধ্ব প্রেমিক

অভাবের সংসারে হাল ধরতে কয়েক বছর আগে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন এক কিশোরী। চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে আরেকটু সচ্ছল থাকার আশায় প্রেমিকের পাতা ফাঁদে পা রাখেন তিনি। সেই ফাঁদই কাল হলো তার জন্য।

নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার খিলগাঁও গ্রামের অটোরিকশা চালক মো. দুলাল মিয়ার মেয়ে রিবা আক্তারের জীবনে এমন বিপর্যয় নেমে আসবে স্বপ্নেও কল্পনা করেনি কেউ। গত মঙ্গলবার রিবা আক্তারের লাশ ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার টাংগাটি গ্রামে ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ঐ ঘটনায় পরদিন আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এরপরই বেরিয়ে আসে রিবা হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা। মাত্র দুই মাস আগে রিবার সঙ্গে পরিচয় হয় কথিত সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার টাংগাটি মধ্যপাড়ায়। তিনি গাজীপুরের গাছা রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান বলেন, গ্রেফতারের পর রিবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন রাজ্জাক। হত্যার কারণ ও পরিকল্পনার কথাও জানান রাজ্জাক। সাংবাদিক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে দুই মাস আগে রিবা আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর চাকরি ও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে চাপ প্রয়োগ করেন রিবা।

এদিকে আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই আমিনুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। রিবার চাপ থেকে মুক্তি পেতে এবং ভাই আমিনুল ইসলামকে ফাঁসাতে একটি মাস্টার প্লান করেন রাজ্জাক। প্ল্যানে তিনি আরো দুই সহযোগীকে যুক্ত করেন।

গত ১৪ মার্চ রাজ্জাক নিজের গ্রামের বাড়িতে রিবাকে বেড়ানোর কথা বলে ধোবাউড়া গোয়াতলা কংশ নদীর তীরে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকে অপেক্ষমান দুই সহযোগীর হাতে তুলে দেন। সেখানে তারা রিবাকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করে রাজ্জাকের ভাই আমিনুল ইসলামের বাড়ির পাশের ধান খেতে লাশ ফেলে রাখে। রিবার পরনের প্যান্টের পকেটে আমিনুল ইসলামের ছেলে শহীদুল্লাহর জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপিও রেখে দেওয়া হয়। যেন পুলিশ তাকে সন্দেহ করে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, রিবাকে হত্যা ও নিজের ভাই আমিনুলকে ফাঁসাতে রাজ্জাক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। রাজ্জাককে গ্রেফতারের পর তার গাজীপুরের ভাড়া বাসা থেকে রিবা আক্তারের মোবাইল ও লাশের পরিহিত প্যান্টের পকেটে পাওয়া জন্ম নিবন্ধনের একটি ফটোকপি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ১৬ মার্চ ধোবাউড়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বাবা দুলাল মিয়া। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ