মাত্র ৩ বছরে ৭টি সরকার দেখল কুয়েত

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের যে দেশটি সর্বপ্রথম পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, সেই কুয়েত এখন প্রকট হয়ে উঠেছে প্রশাসনিক অস্থিতিশীলতা। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে দেশটিতে ৬টি সরকারের পতন ঘটেছে।

রোববার দেশটির ৮৫ বছর বয়সী আমির নাওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহ একটি নতুন ডিক্রি জারি করেছেন। সে ডিক্রিতে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা শেখ আহমেদ নাওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহকে পুরনো মন্ত্রিসভা বাতিল করে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কুয়েতের সরকারের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে দেওয়া এক টুইটবার্তায় নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্য।

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কুয়েতের আয়তন মাত্র ১৭ হাজার ৮১৪ বর্গকিলোমিটার, জনগণ ৪২ লাখের কিছু বেশি। ১৯৬২ সালে দেশটিতে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত পার্লামেন্টারি শাসন ব্যবস্থা চালু হয়।

এই পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা অবশষ্য পুরোপুরি গণতান্ত্রিক নয়। কারণ পার্লামেন্টারি শাসন চালুর শুরু থেকেই কুয়েতের সরকারপ্রধান বা প্রধানমন্ত্রীর পদে যিনি আসছেন— তিনি কোনো না কোনো কোনো ভাবে দেশটির শাসক (আমির) পরিবারের সদস্য। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ আহমেদ নাওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহ কুয়েতের আমির নাওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহের বড় ছেলে। তার আমলে চারবার নতুন সরকার এসেছে দেশটিতে।

কুয়েতের মন্ত্রিসভায় সদস্যসংখ্যা ১৪ জন। রোববার আমিরের ডিক্রিতে বলা হয়েছে— প্রধানমন্ত্রী শেখ আহমেদ নাওয়াফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালেম আল সাবাহ এবং জ্বালানি তেল বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বাদের আল মোল্লা তাদের পদে বহাল থাকবেন। এই ৩ জন ব্যতীত বাকি ১১টি পদে রদবদল আসবে।

এছাড়া সরকারি কার্যক্রম ও সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স— মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপদে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ডিক্রিতে।

কুয়েতের এই প্রশাসনিক জটিলতা বা অস্থিরতার মূল কারণ দেশটির আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে মন্ত্রিসভা ও ক্ষমতাসীন আল-সাবাহ পরিবারের দ্বন্দ্ব। কুয়েতের পার্লামেন্ট মজলিস আল উম্মা আল কুয়েতি বা কুয়েত জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত আইনপ্রণেতা আছেন ৫০ জন। এই আইনপ্রণেতাদের অভিযোগ— মন্ত্রিসভার যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কেবল আল-সাবাহ পরিবারের স্বার্থরক্ষাকেই বিবেচনা করা হয়, পার্লামেন্ট সদস্যদের মতামতের কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না।

গত তিন বছর ধরে দু’পক্ষের এই দ্বন্দ্বের জেরে শাসনতান্ত্রিক অস্থিতিশীলতার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব পরিষেবার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা খাতও।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ