বড় অপরাধ করেও ছোট শাস্তি পাচ্ছেন হারমানপ্রীত

ম্যাচ চলাকালেই আম্পায়ারিং নিয়ে বেজায় ক্ষিপ্ত ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর। গতকাল (শনিবার) মিরপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আউট হওয়ার পর আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টাম্পে ব্যাট দিয়ে সজোরে আঘাত করেছিলেন কৌর। এরপর ম্যাচ শেষেও বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও আম্পায়ারদের উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করে বসেন তিনি। যা সুস্পষ্টভাবে ক্রিকেটীয় চেতনার পরিপন্থী। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বিসিবির কর্মকর্তারাও ভারত অধিনায়কের এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

ক্রিকেটীয় আচরণবিধি ভঙ্গ করার দায়ে ধারণা করা হচ্ছিল বড় শাস্তিই পেতে যাচ্ছেন হারমানপ্রীত কৌর। এমনকী নিষিদ্ধও করা হতে পারে। তবে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ আজ (রোববার) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ম্যাচ ফির মাত্র ৭৫ শতাংশ জরিমানা হচ্ছে ভারতীয় অধিনায়কের। ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তৃতীয় তথা শেষ ওয়ানডেতে ভারতের ইনিংসের ৩৪তম ওভারে ঘটনা। নাহিদা আক্তারের বলে হারমনপ্রীত কৌরের বিপক্ষে ক্যাচ আউটের জোরালো আবেদন ওঠে। তাতে সাড়া দিয়ে আউট দেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত কিছুতেই যেন মানতে পারছিলেন না ভারত অধিনায়ক। মাঠে কয়েক সেকেন্ড দাঁড়িয়ে থেকে হাতে থাকা ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে বসেন হারমানপ্রীত। এতে একটি স্ট্যাম্প উড়ে ৪-৫ হাত দূরে চলে যায়। এরপর আম্পায়ারের উদ্দেশে কিছু কথা বলে ক্ষোভ নিয়ে মাঠ ত্যাগ করেন তিনি।

এরপর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ ঝারেন তিনি। হারমানপ্রীত বলেন, ‘আমার মনে হয় সিরিজটা আমাদের জন্য বড় শিক্ষণীয়। ক্রিকেটের বাইরে, যে ধরনের আম্পায়ারিং হয়েছে তা আমাকে খুবই বিস্মিত করেছে। পরে যখন আমরা আবার বাংলাদেশে আসবো, এই ধরনের বিষয় মোকাবিলা করতে হবে সেটা নিশ্চিত হয়েই আসবো, সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেব।’

এরপর ম্যাচ নিয়ে দু-চারটি বাক্য বলেই আবারো আম্পায়ারিং নিয়ে কথা বলেন হারমনপ্রীত। তিনি বলেন, ‘আগেই বলেছি, খুবই বাজে আম্পায়ারিং হয়েছে। আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে খুবই হতাশ।

আম্পায়ারিং নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা ছাড়াও দুই দলের একসঙ্গে ফটো সেশনের সময়ও বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করেছেন হারমানপ্রীত। যে কারণে বাংলাদেশ অধিনায়ক ফটো সেশন সংক্ষিপ্ত করে চলে যান ড্রেসিংরুমে। পরে সংবাদসম্মেলনে এ প্রসঙ্গে টাইগ্রেস অধিনায়ক জ্যোতি বলেন, ‘ও এমন কিছু শব্দ বলেছে যা আমি বলতে পারছি না। এটা তো জেন্টালম্যান গেম, ওখানকার পরিবেশ এমন ছিল তাই দল নিয়ে সরে আসছি।‘

ক্রিকেটীয় বিধি অনুযায়ী, মাঠে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে বা কোন ক্রিকেটার বা ম্যাচ অফিসিয়ালের প্রতি বাজে দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেই হিসেবে হারমানপ্রীতের শাস্তি পাওয়া নিশ্চিতই ছিল। জানা গেছে, ম্যাচ অফিসিয়ালদের তরফে হারমানপ্রীতকে আর্থিক জরিমানা ও ডি মেরিট পয়েন্ট দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। তবে তাকে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো সুপারিশ করা হয়নি।

ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ ক্রিকবাজকে বলেন, অনফিল্ডের ঘটনার জন্য (স্ট্যাম্পে আঘাত) তাকে ৫০ শতাংশ এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাজে মন্তব্যের জন্য আরও ২৫ শতাংশ জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। সেই হিসেবে মাঠের ঘটনার জন্য দুটি ডিমেরিট এবং প্রেজেন্টেশন পার্টির জন্য আরও এক ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হবে হারমানপ্রীতের নামের পাশে। হারমানপ্রীত ছাড়া অন্য কোনো ভারতীয় ক্রিকেটারকে শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ