দেশে মার্কিন ডলারের তীব্র সংকট চলছে। বাড়ছে দাম। কমছে টাকার মান। খোলাবাজার বা কার্ব মাকের্টে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, দেশে ডলার আসার চেয়ে যাচ্ছে বেশি; তাই দাম বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের ডলার আসার তুলনায় যাচ্ছে বেশি। তাই বিদেশে যাওয়ার সময় ক্যাশ ডলার বহনে নিরুৎসাহিত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই ডলারের আউট-ফ্লো বেড়ে গেছে। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সে পরিমাণ ডলার দেশে আসছে না। এ কারণেই খোলা বাজারে ডলারের দাম বেড়েছে।
মুখপাত্র বলেন, আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে ডলার সংকট হয়েছে। রিজার্ভও কমেছে। রপ্তানির তুলনায় বাংলাদেশের আমদানি বেশি। তাই আমদানি-রপ্তানির মধ্যে শূন্যস্থান পূরণ করতে হলে রপ্তানি বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। বাজার স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটা অব্যাহত থাকবে। তবে রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ কর্মকর্তা।
ডলারের কারসাজি ধরতে খোলাবাজার, মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ ও বিভিন্ন ব্যাংকে ধারাবাহিক অভিযান চলছে। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করার প্রমাণ পাওয়ায় গত ৮ আগস্ট দেশি-বিদেশি ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
এছাড়া ডলারের কারসাজি রোধে খোলা বাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কারসাজির অপরাধে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪২টিকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।