ভালোবাসা দিবসে ময়মনসিংহের সোহেল মিয়া ও প্রতিবন্ধী রওশন দম্পতিকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর, তা দেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক নারী সোহেল মিয়াকে তার নিখোঁজ হওয়া স্বামী বলে দাবি করেছেন।
ওই নারীর নাম শুরাতন বেগম। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামে।
শুরাতন বেগম জানান, সোহেল মিয়া নাম বলা হলেও তার স্বামীর নাম মোখলেশুর রহমান, ডাক নাম বকুল। তাদের বিয়ে হয় ১৯৯২ সালে। এরপর ২০০৫ সালের দিকে কাজের জন্য ঢাকা যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ছাড়ার পর আর ফিরেননি। ওই সময় তিনি খোঁজখবর করেছিলেন, তবে কোনো সন্ধান পাননি। তারপরও স্বামীর প্রতীক্ষায় ছিলাম।
শুরাতন বেগম বলেন, তার তিন ছেলে এক মেয়ে। ছেলে মেয়েদের নিয়েই তিনি এরপর অনেক কষ্টে সংসার চালিয়ে যান। মেয়ের বিয়ে হয়েছে, এখন তিন ছেলে তার সঙ্গেই থাকে।
শুরাতন বেগম আরও বলেন, ছেলে মেয়েদের অনেক কষ্টে বড় করেছি। সবসময় ভাবতাম আমার স্বামী এখনই চলে আসছে। মেয়েটির বিয়ে দিলাম কিছুদিন আগে। বড় এবং মেজ ছেলে চায়ের দোকান চালায়। ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ছোটটাকে কষ্ট হলেও পড়াচ্ছি। আর্থিক অনটনের জন্য বড় এবং মেজ ছেলে পড়াশোনা করতে পারেনি।
এতদিন পর স্বামীর খোঁজ পেলেন, স্বামীকে ফিরিয়ে নিতে চান কিনা, জানতে চানতে চাইলে শুরাতন বেগম বলেন, এখন আর ফিরিয়ে নিতে চাই না। তবে সে মিথ্যা কথা বলেছে এটা সবাই জানুক। আমি এটাই চাই।
শুরাতন বেগমের বড় ছেলে সিহাব উদ্দীন জানান, তার বাবাকে ফেসবুক, টিভি দেখে চিনতে পেরেছি। এতদিন জানতাম বাবা নিখোঁজ। তার বাবা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। প্রচার করা হয়েছে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়েছেন। সেটিও মিথ্যা কথা।
সিহাব বলেন, তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। মেজ ভাই সোহাগকে নিয়ে একটি চায়ের দোকান চালাই। সেই আয় নিয়ে মাকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি।
এখন কী চান এমন প্রশ্নে সিহাব বলেন, আমরা কিছুই চাই না, তবে যে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে, এটাই দেশবাসীকে জানাতে চাই। তাই কথা বলছি। তিনি আমার বাবা। আমি ছেলে হিসেবে বলতে হচ্ছে, আমার বাবা মিথ্যা বলছেন।
ভাইরাল হওয়া সোহেল মিয়া ওরফে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোখলেশুর রহমান বকুল বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে থাকা তার স্ত্রী ও সন্তানের কথা এতদিন স্বীকার না করলেও বিষয়টি সামনে আসায় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, আমার প্রথম স্ত্রী ও সন্তান আছে, এটা সঠিক। সেটি এতোদিন গোপন রেখেছিলাম। সেই সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার যে তথ্য দিয়েছিলাম, সেটিও মিথ্যা ছিল। এসএসসি পরীক্ষাও দেওয়া হয়নি।