টিকটকের ভয়ঙ্কর ‘ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ’ যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ

শর্ট ভিডিও মেকিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টিকটক। ইনস্টাগ্রামের অনেক আগেই রিল ভিডিওর মতো চমৎকার ফিচার নিয়ে আসে প্ল্যাটফর্মটি। প্রতিদিন এক প্রকার নিয়ম করে ভাইরাল হয় টিকটক ভিডিও। কিন্তু জনপ্রিয় সেই প্ল্যাটফর্মই যে ১৫ বছরের কম বয়সী কিশোরদের মৃত্যুর কারণ হবে, তা আর কে জানত।

চীনা এই শর্ট ভিডিও প্রোডাকশন প্ল্যাটফর্মের ‘ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ’ নিয়ে তাই এখন বিস্তর বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কী এই ‘ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ’, তার কারণে কীভাবে কিশোররা প্রাণ হারাচ্ছে, এমনই সব তথ্য এক নজরে জেনে নেওয়া যাক।

সংবাদমাধ্যম দ্য ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিকটক ব্যবহারকারীদের ‘নিজের’ বেল্ট, টাই বা অনুরূপ কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করতে উৎসাহিত করা হয়, যতক্ষণ না তারা এই চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হতে পারছে। অভিভাবকরা দাবি করেছেন, টিকটকের ভয়ঙ্কর ‘ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ’ অ্যাক্সেপ্ট করে তাদের সন্তানরা শ্বাসরোধে মারা গেছে। এ নিয়ে টিকটকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রতি দুটি মামলা দায়ের করেছেন আট বছরের লালানি ওয়াল্টন এবং নয় বছরের আরিয়ানি আরোয়োর অভিভাবকরা।

একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভার্জ বলছে, গত বছরের জানুয়ারিতে ইতালিতে ১০ বছর বয়সী একজনের, মার্চে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরের, জুনে অস্ট্রেলিয়ায় ১৪ বছরের এক কিশোরের, জুলাইয়ে ওকলাহোমায় ১২ বছরের এক কিশোরের, ডিসেম্বরে পেনসিলভেনিয়ায় ১০ বছরের আরেক কিশোরের মৃত্যু হয়। এসব ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ টিকটকের ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ।

পেনসিলভেনিয়ার ১০ বছরের কিশোর নাইলা অ্যান্ডারসনের মা তাওয়াইনা অ্যান্ডারসন। সন্তানের মৃত্যুর পর ইতোমধ্যে টিকটকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তার দাবি, এই চ্যালেঞ্জ বাচ্চাদের বিপজ্জনক কাজের দিকে ঠেলে দেয়। কিছু ক্ষেত্রে আবার এমনও দেখা গেছে যে, কিশোররা ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ না খুঁজে ফিল্ম দেখেই ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।

এই চ্যালেঞ্জ একটা সময়ে টিকটকের দৌলতে খুবই ভাইরাল হয়। প্রথমত, অভিযোগ উঠেছিল কেন এই চ্যালেঞ্জ এত জনপ্রিয় একটা প্ল্যাটফর্ম বাচ্চাদের অ্যাক্সেপ্ট করতে উৎসাহিত করছিল। দ্বিতীয়ত, টিকটক অ্যাপের মেইন স্ক্রিনে একেবারে সকলের সামনে ‘ফর ইউ ট্যাবে’ রাখার অভিযোগ উঠতেও বিতর্ক বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে টিকটকের একজন মুখপাত্র বলেন, এই অস্থির চ্যালেঞ্জ কখনই টিকটকের ছিল না। তার কথায়, অন্য জায়গা থেকে শুনে ব্যবহারকারীরা এই চ্যালেঞ্জে অংশ নিচ্ছিল এবং টিকটকে তার ভিডিও শেয়ার করছিল। তিনি আরও বলেন, এমন কোনও ফিচার বা চ্যালেঞ্জ টিকটক নিজে থেকে নিয়ে আসে না, প্রচার করার কোনও প্রশ্নই নেই।

টিকটকের ওই মুখপাত্র বলেন, আমরা ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিদানে সর্বদা মনোযোগী। এমন কোনও বিষয় আমাদের প্ল্যাটফর্মে আবিষ্কৃত হলে যত দ্রুত সম্ভব আমরা সেটিকে সরিয়ে ফেলব। যাদের পরিবারে এমন বিরাট ক্ষতি হয়েছে, আমাদের হৃদয় পড়ে রয়েছে তাদের সঙ্গে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ