নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর থেকেই চলছে বাংলাদেশের অতল যাত্রা। ব্যাটিং বিপর্যয়ে একের পর এক টেস্টে ভরাডুবি হচ্ছে। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে ঘুণে ধরা ব্যাটিংয়ে বিফলে যায় বোলারদের নৈপুণ্য, সাত উইকেটের বড় হার সঙ্গী হয় বাংলাদেশের। সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান বোর্ড পরিচালক আকরাম খান মনে করেন, বেশি চাপ নিয়ে ফেলার কারণেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে বাংলাদেশের ব্যাটিং।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হাই-পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বাংলাদেশের চলমান উইন্ডিজ সফর নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এইচপির ভাইস চেয়ারম্যান আকরাম খান। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের এমন ভরাডুবি প্রত্যাশা করেননি জানিয়ে আকরাম বলেন, ‘টেস্টে যে রকম আশা করেছিলাম সেরকম কিন্তু হচ্ছে না। কারণ আমাদের একসঙ্গে কয়েকজন ব্যাটসম্যান ফর্মে নেই। ছোট ফরম্যাটে যেমন হয় আপনি এক-দুইটা ওভার ভাল করেও রিকভারি করা যায়। কিন্তু টেস্টে এরকম না একসঙ্গে দল হয়ে ভাল করতে হয় মানে ১১ জনকেই ভাল খেলতে হয়।’
আকরাম খানের চাওয়া, ‘আমরা গত কিছু টেস্টে খারাপ করেছি। আশা করছি পরের ম্যাচ থেকে যেন ব্যাপারটা বদল হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে শুরু থেকে আমাদের ডমিনেট করতে হবে। ওরা (উইন্ডিজ) যদি আমাদের ডমিনেট করে ফেলে তাহলে আবারও একই ফল হবে। কারণ যেহেতু আমরা মানসিকভাবে এখন একটু দুর্বল আছি তাই প্রত্যাবর্তন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
টানা ব্যর্থতায় অনেক ক্রিকেটারেরই এখন আত্মবিশ্বাস তলানিতে। এমন অবস্থায় গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে কাটাছেড়ার নেতিবাচক মানসিক প্রভাব এড়াতে ক্রিকেটারদের সেগুলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক, ‘মানসিক স্বচ্ছন্দতা বাড়াতে হবে। যদি বেশি চাপ নিয়ে নেয় তাহলে সম্ভব না। আমাকে রান করতেই হবে এ জিনিসটা হলে হবে না। আর প্লেয়ারদের মিডিয়াকে অ্যাভয়েড করতে হবে। এ জিনিসটা করলে ভাল হয়। আপনারা দেখেছেন ভারত যখন চ্যাম্পিয়ন হয় তার আগে এক বছরের মতো কোন ক্রিকেটারকেই মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে দেখিনি। কারণ মিডিয়া ভাল করলে ভাল, আর যদি খারাপ করে তাহলে মিডিয়ার নিউজগুলো পড়লে মানসিক চাপটা বেড়ে যায়। তো ক্রিকেটারদেরকে মিডিয়া থেকে একটু দূরে থাকতে হবে।’
বন্যার কারণে সিলেট থেকে এইচপির ক্যাম্প ঢাকায় স্থানান্তর করেছে বিসিবি। এইচপির ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে আকরাম বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ হল এই বয়সেই একটা লক্ষ্য ঠিক করা। সাকিব-তামিম-মুশফিকরা যখন এই বয়সে ছিল তখনও ওদের মতোই স্ট্যান্ডার্ডে ছিল বা একটু বেশি ছিল। ওরা ওই সময়ে একটা লক্ষ্য ঠিক করেছে যে আমরা নিজেদের ভাল মানের ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করবো এবং ওই পর্যায়ে ওরা উঠেছে। এই ক্রিকেটারদের সুযোগটা দারুন। অনেক ক্রিকেটার আছ এইচপিতে সুযোগ পাচ্ছে না। এরা এখানে এসে কোয়ালিটি কোচ পাচ্ছে, সুবিধাও পাচ্ছে।’
‘আমাদের ভাল ক্রিকেটার আছে কিন্তু কোয়ালিটি ক্রিকেটারের সংখ্যা কম, আমরা চাচ্ছি যেন কোয়ালিটি ক্রিকেটার উঠে আসে। অনেকে গ্র্যাজুয়েশন করার আগেই ছোট ফরম্যাটে খেলার চিন্তা করে ফেলে। একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে বা যারা টেস্টে ভাল করে তারা সব ফরম্যাটেই ভাল করে। লক্ষ্যটা ঠিক রাখতে হবে টেস্টের জন্য। ওদের ফিটনেসসহ বাকি সবকিছু ঠিক আছে তো সেভাবে যদি লক্ষ্য ঠিক করে তাহলে কোয়ালিটি ক্রিকেটার উঠে আসবে।’