চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি অত্যাধুনিক পরিশোধন স্থাপনা নির্মাণের জন্য চীনা অংশীদারদের সাথে চুক্তি করেছে বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি কোম্পানি সৌদি আরামকো। রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে চীন-সৌদির এই চুক্তির তথ্য জানানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আমিন নাসের বলেছেন, চীনের লিয়াওনিং প্রদেশে পরিশোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যাল স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য চীনের নর্থ হুয়াজিন কেমিক্যাল ও পাঞ্জিন জিনচেংয়ের সাথে চুক্তিতে পৌঁছেছে জ্বালানি জায়ান্ট আরামকো।
রোববার বেইজিংয়ে চায়না ডেভেলপমেন্ট ফোরামে এই চুক্তির ঘোষণা দেন আমিন নাসের। তিনি বলেন, আমাদের বৃহত্তর ব্যবসা সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তরলকে সরাসরি রাসায়নিকে উচ্চ রূপান্তরের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়ে চীনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ও সমন্বিত ডাউনস্ট্রিম খাত গড়ে তোলার একটি বড় সুযোগ দেখতে পাচ্ছি।
নাসের বলেন, চীনের দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি নিরাপত্তা এবং উচ্চমানের উন্নয়নের জন্য জ্বালানি ও রাসায়নিকের সামগ্রিক উৎস হতে চায় আরামকো।
২০১৭ সালের মার্চে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের বেইজিং সফরের সময় লিয়াওনিং পরিশোধনাগার নির্মাণের বিষয়ে চীন-সৌদির মাঝে প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
পরে ২০১৯ সালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বেইজিং সফরের সময় চীনা দুই অংশীদারের সাথে শোধনাগার স্থাপনের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছায় আরামকো। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মিত্রের সাথে সৌদির এই চুক্তিকে ‘যুগান্তকারী’ হিসাবে দেখা হয়।
২০২০ সালে চীনে কঠোর করোনা লকডাউনের কারণে জ্বালানির চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং অনিশ্চিত বাজার পরিস্থিতির কারণে সৌদি কর্তৃপক্ষ ওই পরিশোধনাগার স্থাপনের উদ্যোগে বিনিয়োগ সংক্ষিপ্তভাবে স্থগিত করে দেয়।
একই বছরের গোড়ার দিকে এই বিনিয়োগের আলোচনা পুনরুজ্জীবিত করা হয়। গত বছরের মার্চে আরামকো জানায়, চীনের নর্থ গ্রুপ কর্পোরেশনের সাথে দৈনিক ৩ লাখ ব্যারেল জ্বালানি পরিশোধনের ওই উদ্যোগে বিনিয়োগ করবে আরামকো। চীনের ইথিলিন ক্র্যাকার এই কোম্পানি নরিনকো নামে পরিচিত। নর্থ হুয়াজিন কেমিক্যাল ও পাঞ্জিন জিনচেংয়ের মূল কোম্পানি এটি।
আরামকো ২০২৭ সালের মধ্যে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল থেকে এক কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বর্তমান সক্ষমতার তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি করবে এই কোম্পানি; যা রপ্তানির জন্য প্রতিদিন অতিরিক্ত ১০ লাখ ব্যারেল তেলের জোগান দেবে, বলেছেন নাসের।
তিনি বলেন, কম কার্বন নিঃসরণের মাধ্যমে সৌদি আরবে স্টিল প্লেট তৈরির লক্ষ্যে সৌদি কোম্পানি চীনের বাওশান আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানির সাথে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি করছে।