যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজের বড় ছেলে বিউ বাইডেনের মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্য গুলিয়ে ফেলেছেন। তার এই ভুলের কারণে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যথেষ্ট মানসিক সামর্থ্য তার রয়েছে কিনা— এই প্রশ্নে ফের চর্চা শুরু হয়েছে বাইডেনবিরোধীদের মধ্যে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে ইরাক যুদ্ধে নিহত মার্কিন সেনাদের আত্মীয়-পরিজনদের এক সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আমি একজন সন্তানহারা পিতা। আপনাদের মতো আমিও আমার ছেলেকে ইরাকে হারিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বড় ছেলে বিউ বাইডেন তার প্রথম যৌবনে ইরাকে মার্কিন সেনাবাহিনীর আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন ঠিকই কিন্তু সেখানে তার মৃত্যু হয়নি। পরে ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে আইনপেশায় যোগ দেন।
গ্লিওব্লাস্টোমা নামের এক প্রকার মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৫ সালের মে মাসে মারা যান বিউ বাইডেন। তার বয়স তখন ছিল ৪৬ বছর এবং সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের প্রধান আইন কর্মকর্তা বা অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য ঘেঁটে জানা গেছে— ইরাক থেকে ফিরে আসার পর এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিউ।
বাইডেন অবশ্য এই প্রথম এমন ভুল করলেন— তা নয়। এর আগে গত বছর জাপানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি প্রদর্শনে গিয়েও তিনি বলেছিলেন, তার বড় ছেলে বিউ ইরাক যুদ্ধে মারা গেছে।
এই বয়সী একজন মানুষের পক্ষে কথা, ঘটনা বা তথ্য ভুলে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কারণ যে বয়সে মানুষের মস্তিষ্কের কোষগুলো দুর্বল হতে থাকে— বাইডেন কয়েক বছর আগেই সেই বয়সে উপনীত হয়েছেন।
কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্মৃতিশক্তির ক্ষয় নিয়ে তার বিরোধীদের আলোচনার মূল কারণ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কিছুদিন আগে জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন— আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। তারপর থেকেই মার্কিন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রশ্ন উঠছে— এই বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো মানসিক সক্ষমতা তার রয়েছে কি না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ ভোটারদের একাংশ মনে করেন— আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সব রকম যোগ্যতা রয়েছে বাইডেনের। আবার অপর একটি অংশ মনে করেন— বয়সজনিত কারণে রাজনীতি থেকে দ্রুত অবসর নেওয়া উচিত তার।
এ কারণেই শুক্রবার বাইডেনের নিজের ছেলের মৃত্যুর তথ্য ভুলে যাওয়ার ঘটনার পর মার্কিন রাজনৈতিক পরিমন্ডলে ফের প্রশ্ন উঠছে— আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মতো যথেষ্ট মানসিক সক্ষমতা কি রয়েছে বাইডেনের?