৮শ কোটির বিশ্বে সর্বোচ্চ অবদান ভারতের, দ্বিতীয় চীন

গত এক যুগে ১০০ কোটি মানুষ বেড়ে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ছুঁয়েছে ৮০০ কোটির মাইলফলক। নতুন এই ১০০ কোটি মানুষের মধ্যে ভারতের ‘অবদান’ সর্বোচ্চ এবং এই তালিকায় ভারতের পরেই আছে চীন।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক জনসংখ্যা বিষয়ক অঙ্গসংগঠন ইউনাইটেড নেশন্স পপুলেশন ফান্ডের (ইউএনএফপিএ) প্রতিবেদন ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্টস ২০২২’ পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত প্রায় ১২ বছরে ভারতের জনসংখ্যা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি— ১৭ কোটি ৭০ লাখ; অন্যদিকে চীনের জনসংখ্যা এই সময়সীমায় বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ কোটি ৭০ লাখ।

ইউএনএফপিএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত ১২ বছরে মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতে। এই এক যুগ সময়সীমার মধ্যে দেশটির মোট জনসংখ্যায় নতুন মুখ যোগ হয়েছে ১৭ কোটি ৭০ লাখ।’

‘এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন। দেশটিতে মোট ৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষ যুক্ত হয়েছে গত ১২ বছরে।’

ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্ট ২০২২ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যা বর্তমানে ১৪১ কোটি ২০ লাখ এবং চীনের মোট জনসংখ্যা ১৪২ কোটি ৬০ লাখ।

প্রতিবেদন আরও বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে হার লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে বর্তমান ৮০০ কোটি থেকে এই সংখ্যা ৯০০ কোটিতে উন্নীত হতে সময় নেবে ১৪ বছরের কিছু বেশি সময়। অর্থাৎ আগামী ২০৩৭ সালের মধ্যেই এ গ্রহের জনসংখ্যা ৯০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করবে।

তারপর আগামী ২০৮০ সালে জনসংখ্যা ১ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ। পরবর্তী শতাব্দী অথাৎ ২১শ’ সালের শুরু পর্যন্ত বিশ্বের জনসংখ্যা থাকবে ১ হাজার কোটি থেকে ১ হাজার কোটি ৪০ লাখের মধ্যে।

২০১০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল ৭০০ কোটি। তারপর গত এক যুগে নতুন যে ১০০ কোটি মুখ এই সংখ্যায় যুক্ত হয়েছেন, তাদের প্রায় ৭০ শতাংশই নিম্ন ও নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মানুষ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইউএনএফপিএ।

উচ্চ-উচ্চ মধ্যম-মধ্যম-নিম্নমধ্যম ও নিম্ন আয়ের বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী দশকগুলোতে বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে নিম্ন মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ‘অবদান’ ৯০ শতাংশ বা তারও অধিক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

২০৫০ সাল নাগাদ নিম্ন ও নিম্ন মাঝারি আয়ের দেশগুলোর মোট জনগণেন অধিকাংশেরই বয়স থাকবে ৬৫ বছরের কম। অন্যদিকে উচ্চ ও উচ্চ মাঝারি আয়ের দেশগুলোর মোট জনগণের অধিকাংশের বয়স থাকবে ৬৫ বছরের বেশি।

তবে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে মোট জনসংখ্যার হিসেবে চীনকে পেছনে ফেলবে ভারত। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, ২০৫০ সালে ভারতের জনসংখ্যা হবে ১৬৬ কোটি ৮০ লাখ এবং চীনের জনসংখ্যা পৌঁছাবে ১৩১ কোটি ৭০ লাখ।

তার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই চীনে বাৎসরিক জন্মহার কমছে এবং বর্তানে হারে এটি হ্রাস পাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে ২০২৩ সালে চীনে জন্মহার শূন্যের কোঠায় পৌঁছাবে।

আপাত দৃষ্টিতে ১২ বছরে ১০০ কোটি মানুষের বৃদ্ধিকে অনেক বড় বলে মনে হলেও ইউএনএফপিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত ১২ বিশ্বের জনসংখ্যা যে হারে বেড়েছে, তা ১৯৫০ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। ২০২০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ শতাংশেরও কম।’

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ