কলসিন্দুর কন্যাদের ভালোবাসায় বরণ করল ময়মনসিংহ

সাফজয়ী কলসিন্দুরের ৮ সোনার মেয়ে পা রেখেছে নিজ জেলা শহর ময়মনসিংহে। দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা এ স্বর্ণজয়ী মেয়েদের দেখতে নগরীর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কে আগমন ঘটে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সংবর্ধনাস্থল পার্কের বৈশাখী মঞ্চে এসে উপস্থিত হন কলসিন্দুরকন্যারা। একে একে মঞ্চে ওঠেন সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, শামছুন্নাহার সিনিয়র, শামছুন্নাহার জুনিয়র, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, সাজেদা আক্তার ও মার্জিয়া আক্তার।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন মুকুলসহ অনেকে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আট ফুটবলারের হাতে ক্রেস্টসহ বিভিন্ন উপহার তুলে দেওয়া হয়। এসময় পুরস্কার হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা এবং প্রান্ত স্পেশালাইজড হাসপাতালের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় আরও এক লাখ টাকা।

এর আগে সড়কপথে বেলা সাড়ে ১১ টায় ময়মনসিংহে আসেন এ আট নারী ফুটবলার। জেলা সদরে প্রবেশ করার পর তাদের ওঠানো হয় একটি পিকআপ ভ্যানে। সেই গাড়িতে করেই নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সার্কিট হাউজে পৌঁছান এ নারী ফুটবলাররা। যাত্রাপথে সড়কের দুই পাশে হাত নেড়ে তাদের অভ্যর্থনা জানায় নগরবাসী। সার্কিট হাউজে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে সংবর্ধনাস্থলে যান দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা ময়মনসিংহের এ আট নারী ফুটবলার।

দীর্ঘ দুই মাস পর ঘরে ফিরে ময়মনসিংহবাসীর এমন ভালোবাসায় সিক্ত সানজিদা-মারিয়ারা। এই ভালোবাসা আগামীতে আরও ভালো ভালো করার অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে মনে করেন তারা।অনুষ্ঠানে নিজের অভিব্যক্তি জানাতে গিয়ে সাফজয়ী বাংলাদেশ ফুটবল দলের মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার বলেছেন, সাফ জেতার পর সবাই অপেক্ষা করছিল আমরা কখন নিজেদের শহরে আসবো কিংবা গ্রামে যাবো। ফাইনালি আজকে আমরা এসেছি। এসেই আমরা সংবর্ধনা পেলাম, হাজারো মানুষের ভালোবাসা পেলাম। এখানকার সবাই আমাদেরকে সাপোর্ট করে। আবারও এটি নিজের চোখে দেখলাম। সবমিলিয়ে খুবই ভালো লাগছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগে ফুটবলে অনেক জয় পেয়েছি। কিন্তু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জয়লাভ করে মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি তা এর আগে কখনও পাইনি। মানুষের এই ভালোবাসাকে পুঁজি করে সামনের দিনে আরও ভালো কিছু করার জন্য দায়িত্ব বেড়ে গেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেন, সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের ২৩ সদস্যের মধ্যে আটজনই আমাদের ময়মনসিংহের, এটি অবশ্যই আনন্দের বিষয়। নারী ফুটবল দলের এই অনন্য কীর্তিতে সারাদেশবাসী যেমন গর্বিত, তেমনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমিও আনন্দিত। এ অর্জন আমাদের অদম্য স্পৃহা ও উজ্জীবিত তারুণ্যের বহি:প্রকাশ। তারা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

শুক্রবার পুলিশ লাইন্সে রেঞ্জ ডিআইজির পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হবে আরও একটি সংবর্ধনা। এরপর নিজ গ্রাম কলসিন্দুরে ফিরবেন এ জয়িতারা।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ