মহানবীকে অবমাননা: রাজস্থানে দর্জি খুন ঘিরে উত্তেজনা, কারফিউ

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের উদয়পুর জেলায় এক হিন্দু দর্জি খুন হওয়ার পর ওই এলাকায় ব্যাপক ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় মঙ্গলবার ওই দর্জিকে ধারাল ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন দুই মুসলিম যুবক। এই হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যে কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।

নিহত দর্জি ফেসবুকে নুপুর শর্মার সমর্থনে পোস্ট দেওয়ার পর থেকে হুমকি পেয়ে আসছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী। এ জন্য কয়েকদিন দোকান বন্ধ রাখার পর মঙ্গলবার সেটি পুনরায় খুলেছিলেন তিনি।

গোস মোহাম্মদ ও রিয়াজ আখতারি নামের দুই যুবক দর্জির দোকানে গ্রাহকের বেশে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর কানহাইয়া লাল নামের ওই দর্জি এক যুবকের শরীরের মাপ নেওয়ার সময় ধারাল ছুরি দিয়ে তার শিরশ্ছেদের চেষ্টা করা হয়। এ সময় অপর যুবক এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন।

পরে দোকান থেকে পালিয়ে গিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কানহাইয়াকে খুনের ভিডিও পোস্ট করে দায় স্বীকার করেন। এ সময় তাদের উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি পরবর্তী টার্গেট হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও হুমকি দিতে দেখা যায়। পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স বলছে, দর্জি কানহাইয়া লাল হত্যাকাণ্ডের পর উদয়পুরে প্রচণ্ড উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার ইতোমধ্যে উদয়পুরে ইন্টারনেট সেবা স্থগিত এবং বড় ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।

রাজস্থান পুলিশের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা দেশটির গণমাধ্যমকে এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও প্রচার না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি একেবারে ভয়ঙ্কর।

ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদয়পুরের এই ঘটনা হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে জাতীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তৈরি করতে পারে। দেশটির অন্য একটি রাজ্যের সাবেক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা শেষ পাল ভাইড রয়টার্সকে বলেছেন, উদয়পুরে যা ঘটেছে, তা গুরুতর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দিতে পারে।

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট টুইটারে বলেছেন, হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত দুই যুবককে উদয়পুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত নিশ্চিতের মাধ্যমে আদালতে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আমি আবারও সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থাকে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। বিবিসি বলছে, ভারতের শীর্ষ সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা এই ঘটনার তদন্ত করবে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ