তেল ও পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের পাশাপাশি এবার ডিমের বাজারও বেপরোয়া। মাত্র দুই সপ্তাহে হালি প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা।
তাতে এক ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকায়। ঈদ পরবর্তী দুই সপ্তাহে ডিমের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে চরম অসন্তোষ। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বলছেন, ডিমের দাম বাড়লেও তাদের লাভ নেই।
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও ও কারওয়ান বাজারে লেয়ার মুরগির লাল ১০০ ডিম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮৯০ থেকে ৯১০ টাকা দরে। এই ডিম মহাখালী, গুলশান, মালিবাগ, রামপুরা এবং বাড্ডা এলাকার খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকা হালিতে; যা ঈদের আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা হালিতে। অর্থাৎ হালিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। তবে কোনো ক্রেতা একটি কিংবা দুটি ডিম কিনছেন ১১ টাকা দিয়ে।
এসব বাজারে লেয়ার মুরগির পাশাপাশি সাদা কক মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা হালিতে। এই মুরগির ডিমের ক্রেতা কম। আর পাকিস্তানি মুরগি ও হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালিতে।
অপরদিকে সুপারপশগুলোতে লেয়ার মুরগির ডিম হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। আর এক ডজন লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়। অর্থাৎ সুপারশপগুলোতে একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১ থেকে সাড়ে ১২ টাকায়।
খচুরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ৭ মে পর্যন্ত ডিমের দাম কম ছিল। কিন্তু ৮ মে থেকে দাম বাড়তে শুরু করেছে। তারা বলেন, ঈদের আগে লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি করেছি ৩৫ টাকা হালি দরে। আর এক ডজন বিক্রি করেছি ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। এখন এক ডজন ১২০ টাকায় বিক্রি করছি।
বিষয়টি স্বীকার করেছে সরকারি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ(টিসিবি)। বাজারে ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪২ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয় ৩৬ থেকে ৪২ টাকায়। যা এক মাস আগেও ছিল ৩২ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়।
মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম বলেন, ঈদের পর ডিমের বাজার গরম। হালিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা।
দাম বাড়ছে কেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষ বেশি কিনছে তাই দাম বাড়ছে। বেশি দামে না কিনলে তো আর দাম বাড়তো না।
তিনি বলেন, এক কেস (৩০) ডিম বিক্রি করছি ৩০০ টাকা। তাতে লাভ হয় সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৮ টাকা। কিন্তু একটি ডিম ভেঙে গেলে চলে যায় ১০ টাকা। লাভ আর থাকে না। ব্যবসা ধরে রাখার জন্য ডিম বিক্রি করছি।
মহাখালী কাঁচাবাজারে ব্যবসায়ী রোকন উদ্দিন বলেন, মুরগির ডিম আজকে কেনা ৯২০ টাকা শত। তার সঙ্গে আসা-যাওয়ার খরচসহ ডিমের দাম পড়েছে ৯৭০-৯৮০ টাকা। একশ ডিম বিক্রি করলে আমাদের লাভ হবে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এর মধ্যেও রয়েছে ডিম ভেঙে যাওয়ার ভয়। আপনি বলেন, কত টাকা লাভ হয়?
এ বিষয়ে তেজগাঁয় আড়ৎদার আশিকুর রহমান স্বজল বলেন, ঈদের পর সব জিনিসের দাম বেড়েছে। সেটা তো আপনাদের চোখে পড়ে না। তিনি বলেন, মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। এ কারণে খামারিদের কাছ থেকেও বেশি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে।
মেরুল বাড্ডার স্বপ্নের শাখার বিক্রেতা রাবেয়া আক্তার বলেন, স্বপ্নে ডিমে কোনো ভ্যাট নেওয়া হয় না। আমরা খোলা এক ডজন ডিম বিক্রি করছি ১২৬ টাকা। ভিটামিন যুক্ত ডিম ডজন ১৩০ টাকা, ১৪০ এবং ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি।