প্রায় ৩ বছর ক্যান্সারের বিপক্ষে লড়ে গত ১৯ এপ্রিল জীবনের মায়া ত্যাগ করেন সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। রুবেলের নিথর দেহ সমাধিত হয়েছে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। সেখানকার নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি কবরের স্থায়িত্ব দুই বছর। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রুবেলের সহধর্মিণী চৈতি ফারহানা রূপার চাওয়া, তাদের একমাত্র ছেলের কথা ভেবে হলেও রুবেলের কবর স্থায়ী করা হোক।
ছেলে রুশদানকে নিয়ে আজ (শুক্রবার) রুবেলের কবর জিয়ারত করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন চৈতি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, ‘রুবেল তো আসলে আমাদের সবার, তাই না? রুবেল তো দেশের জন্য খেলেছে। মাত্র দুই বছরের জন্য এখানে। সত্যি কথা বলতে এখানে স্থায়ী করতে হলে অনেক টাকা লাগে, প্রায় এক কোটি টাকা লাগে। আমার কাছে তো এতগুলো টাকা নেই। আমি চাই রুবেলের কবরটা স্থায়ী হোক। রুবেল যেন একটু মাটি পায়।’
সঙ্গে যোগ করেন চৈতি, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই চাওয়া, উনি তো অনেককে অনেক কিছু দেন। উনি তো আমাদের ক্রিকেটারদের জন্য অনেক কিছু করেন। জীবিত ক্রিকেটারদের জন্য তো উনার অনেক কিছু…। আমার রুবেল একজন মৃত ক্রিকেটার, তাকে কী একটু মাটি দিবেন না।’
২০১৯ সালে মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়লে মাঠ থেকে ছিটকে পড়েন রুবেল। চিকিৎসা নিয়ে প্রায় সেরে উঠলেও নতুন করে টিউমার ধরা পড়ে তার মস্তিষ্কে। নতুন করে টিউমার ধরা পড়ায় শঙ্কায় পড়ে যায় রুবেলের জীবন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই ক্রিকেটার সিঙ্গাপুরে গিয়ে চিকিৎসা করান।
ভালো না হওয়ায় গত বছরের নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের একটি হাসপাতালে আবারও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রুবেলের ব্রেন টিউমার অপসারণ করা হয়। তবে তাতেও খুব একটা উন্নতি হয় না। অবশেষে তো চিরবিদায় বলে দিলেন রুবেল! তাকে সুস্থ করতে তিন বছর ধরে ক্যানসারের ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ টানতে হিমশিম খেতে হয়েছে রুবেলের পরিবারকে। তাদের এখন কোটি টাকা দিয়ে কবর স্থায়ী করানোর সাধ্য নেই।
রুবেলের স্ত্রী বললেন, ‘রুবেলের জন্য একটা স্থায়ী মাটি যাতে আমার ছেলেটা দেখতে পারে। দু’ই ছর পর তুলে ফেললে আমরা তো পারব না রুবেলকে দেখতে। রুবেল তো কোথাও নেই, শুধু এখানে আছে।’