শেরপুরে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২৩’ পালিত

:: শেরপুর প্রতিনিধি ::

জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে ন্যায় শেরপুরে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩’ পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে পুলিশ লাইনস্ শেরপুরে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে জেলা পুলিশের পক্ষে থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জনাব মোঃ কামরুজ্জামান বিপিএম, পুলিশ সুপার, শেরপুর।

এছাড়াও জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গের পক্ষে থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে জেলা পুলিশের একটি চৌকস পুলিশ দল সশস্ত্র সালাম এর মাধ্যমে তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায়।

এসময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পরে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

পরবর্তীতে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২৩’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।

জনাব মোঃ কামরুজ্জামান বিপিএম, পুলিশ সুপার, শেরপুর মহোদয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন নিহত সার্জেন্ট আহাদের ভাই সাংবাদিক এম এ হাকাম হীরা, নিহত কনস্টেবল রাজিব রবি দাসের স্ত্রী আরতী রানী দাস সহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ বক্তব্য রাখেন। এসময় স্বজন হারানোদের কান্নায় পুরো অনুষ্ঠান ভারী হয়ে ওঠে।

পুলিশ সুপার মহোদয় তাঁর বক্তব্যে বলেন, সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক মানুষের জীবনে কিছু না কিছু দুঃখজনক সময় রাখে আপনার আমাকে পরীক্ষা করার জন্য।

আমি জানি আপনাদের অনেক কষ্ট। আপনাদের পাশে সর্বাত্মকভাবে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চটুকু সহযোগিতা বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় করে থাকে। এজন্যই এই দিবসটিকে বাংলাদেশ পুলিশ চালু করেছে।

আমাদের সাধ্য ও সামর্থের অনেক পার্থক্য আছে আমরা চাইলেই সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আপনাদেরকে সব সময় সহযোগিতা করতে পারি না, তবে আমাদের ইচ্ছা আছে।

তিনি বলেন, আমি একজন প্র্যাকটিস মুসলমান। সেইসাথে একজন অসম্প্রদায়িক মানুষ। যারা হিন্দু ধর্মালম্বী আছেন তাঁদের শারদীয় দুর্গাপূজায় আমার পক্ষ থেকে আপনাদের উৎসবে সামিল হওয়ার সর্বোচ্চটুকু চেষ্টা করবো সেই সাথে আপনাদের কাপড়, খাবার ও যা যা প্রয়োজন ব্যবস্থা করবো।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ঈদ উদযাপন আমার পরিবারের লোকজন যেভাবে করে আপনাদের সাথে নিয়ে পুলিশ সুপার হিসাবে যতদিন আছি আমি আপনাদের সাথে সেই উদযাপন শেয়ার করবো এবং কথা দিচ্ছি আপনাদের ভুলে যাবো না। পরিশেষে পুলিশ সুপার মহোদয় সাধ্য অনুযায়ী যেকোন প্রয়োজনে পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যবরণকারী শেরপুর জেলার ১৯ জন পুলিশ সদস্যের পরিবারবর্গকে সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করে শহীদ পুলিশ পরিবারের সদস্যদের সাথে পুলিশ লাইনস্ কৃষ্ণচূড়া হল রুমে দুপুরের খাবার গ্রহণ করেন পুলিশ সুপার, শেরপুর মহোদয়।

উল্লেখ্য, অকৃত্রিম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে জীবন বাজি রেখে যে সকল পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন সে সকল কর্তব্যরত শহীদ পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ২০১৭ সাল থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ প্রতিবছর ১ মার্চ পালন করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ