হিজবুল্লাহর তীব্র হামলা, হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরাচ্ছে ইসরায়েল

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসের সাথে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর তীব্র হামলার মুখে সীমান্ত এলাকার আরও হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে ইসরায়েল। দুই সপ্তাহের বেশি সময় আগে হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উত্তর সীমান্ত উত্তপ্ত হওয়ায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার এই উদ্যোগ নিয়েছে ইসরায়েল। রোববার নতুন করে উত্তর সীমান্তের আরও ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ইসরায়েলিদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

উত্তর সীমান্ত এলাকার ২৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য গত সপ্তাহে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে ইসরায়েল। রোববার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা লেবানন সীমান্ত লাগোয়া উত্তর ইসরায়েলের আরও ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার তালিকা তৈরি করেছে।

কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকার ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে, গত সপ্তাহে আরও ২৮টি বসতির লোকজনকে রাষ্ট্র-পরিচালিত অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সীমান্ত থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ অনেকের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলের উত্তরের কিরিয়াত এশমোনো শহরের মেয়রের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। সীমান্ত থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরের এই শহরের একজন নারী মেয়রের সামনে চিৎকার করে বলেন, তাকে তেল আবিবে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। কিন্তু তার গ্রামের চেয়ে তেল আবিব নিরাপদ হবে বলে মনে করেন না তিনি।

রাজধানীর উদ্দেশে বাসে যাত্রা শুরুর আগে ওই নারী বলেন, ‘বিবি (প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু) আমি এত বছর ধরে আপনাকে ভোট দিয়েছি। কিন্তু আপনার এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আমার পাঁচ সন্তান এখানে নিরাপদ নয়।’

গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তর সীমান্তে লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। শনিবার উত্তর ইসরায়েল সীমান্তে লড়াইয়ের সময় হিজবুল্লাহর অন্তত ৬ সদস্যের প্রাণহানি ঘটে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইসরায়েলি সীমান্ত এলাকায় এবারের এই সংঘাত ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ এখন পর্যন্ত চলমান এই উত্তেজনা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে রোববার গোষ্ঠীটির নেতা হাসান ফাদলাল্লাহ বলেছেন, হিজবুল্লাহ প্রধান সীমান্ত পরিস্থিতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং লড়াইয়ে কমান্ডারদের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

রোববার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা লেবাননের ভেতরে হিজবুল্লাহর বেশ কিছু লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছেন। এর মধ্যে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থানও রয়েছে। তবে লেবাননের কোন এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি ইসরায়েল।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ