আইফোন ১৪ এর মতো স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের সংযোগ ব্যবহার করে জরুরি বিপদ বার্তা পাঠানোর নতুন ফিচার নিয়ে আসছে অ্যান্ড্রয়েড। এর ফলে মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে গিয়েও স্যাটেলাইট ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে জরুরি বার্তা পাঠানো যাবে।
প্রযুক্তিপণ্যের মেলা কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক শো (সিইএস) ২০২৩ এ কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন স্যাটেলাইট আত্মপ্রকাশ করে। এটিকে একটি নতুন যুগের সূচনা বলছেন প্রযুক্তিবোদ্ধারা।
প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যান্ড্রয়েডে ইরিডিয়ামের প্রযুক্তি সুবিধায় ৬৬ উপগ্রহের মাধ্যমে জরুরি বার্তা, ডাটা ও দ্বিমুখী বার্তা আদান-প্রদান করা যাবে। একইসঙ্গে অন্যদের পাঠানো বার্তা পড়ার সুযোগও মিলবে।
অ্যাপলের জরুরি বার্তা আদান-প্রদানে ব্যবহৃত গ্লোবালস্টার স্যাটেলাইটের মতোই কাজ করবে ইরিডিয়াম। এমনকি এ পরিষেবায় আইফোনের অগ্রগতির সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলিকে সমান সমান রাখবে বলেও দাবি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির।
সিনেটের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অ্যাপলের ইমার্জেন্সি এসওএস এর মতোই কাজ করবে অ্যান্ড্রয়েডের নতুন এ ফিচার।
অ্যাপলের দেওয়া তথ্য মতে, আপনার অবস্থান যদি পরিষ্কার আকাশে নিচে হয় এবং সেই মুহূর্তে আপনি প্রচলিত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার বাইরে থাকেন, তখন স্যাটেলাইটের সঙ্গে আইফোন ১৪ সংযুক্ত করার সুযোগ পাবেন। সহজ করে বললে, পরিষ্কার আকাশ, সামনে উঁচু পাহাড় বা অধিক পাতাযুক্ত গাছ না থাকলে সহজেই আইফোনে স্যাটেলাইট যুক্ত হবে। স্মার্টফোনটি স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত হতে কত সময় নেবে, সেটা নির্ভর করছে আপনার অবস্থান ও পরিবেশের ওপর। এছাড়াও স্বচ্ছ আকাশ থাকলে স্যাটেলাইটে যুক্ত হয়ে কোনো টেক্সট পাঠালে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছবে।
অ্যান্ড্রয়েডের সব ফোনে নতুন এ ফিচারের সুবিধা মিলবে না, এ জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট প্রসেসরে চলা হালনাগাদ মডেলের ফোন ব্যবহার করতে হবে। ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে মুক্তির জন্য অপেক্ষায় থাকা বেশ কিছু ফোনে এ সুবিধা পাওয়া যাবে। এর মধ্যে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগনের ৮ জেন ২ সিস্টেম থাকা ডিভাইসহ স্ন্যাপড্রাগন এক্স৭০ ফাইভজি মডেমের মাধ্যমে এ ফিচার চলবে। এ বছরের শেষ নাগাদ এ সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
এখনো পুরো বিষয়টি খোলাসা করেনি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম। কারণ এ পরিষেবা বাস্তবায়নের অনেক কিছুই নির্ভর করছে ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর।
স্ন্যাপড্রাগন স্যাটেলাইট পরিষেবার জন্য ব্যবহারকারীকে অর্থ গুণতে হবে কিনা, এ ব্যাপারেও স্পষ্ট কিছু জানায়নি সিনেট। তবে বিনামূল্যে দুই বছরের জরুরি এসওএস সেবা প্রদানের কথা জানিয়েছিলো অ্যাপল।
এদিকে জরুরী বার্তার পাশাপাশি একটি প্রিমিয়াম পরিষেবা আনার পরিকল্পনাও রয়েছে কোয়ালকমের। যার মাধ্যমে সামাজিক উদ্দেশ্যে ডেটা বা বার্তা পাঠাতে স্যাটেলাইট ব্যবহার করা যাবে। কোয়ালকমের সেই পরিষেবাটি নিতে কত অর্থ গুণতে হবে তা প্রকাশ করেনি।
ইরিডিয়ামের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার গ্রেগ পেল্টন বলেছেন, যত মানুষই এ সুবিধা ব্যবহার করুক না কেন, বার্তা আদান-প্রদানে কোন সমস্যা হবে না বলেই আমি মনে করি। আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে আমাদের যে সক্ষমতা তা এই পরিষেবা চালানোর জন্য যথেষ্ট।
স্যাটেলাইট সুবিধা ব্যবহার করে জরুরি বিপদ বার্তা পাঠাতে পারেন আইফোন ১৪ সিরিজের আইফোন ব্যবহারকারীরা। গত বছরের নভেম্বর মাসে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে ইমার্জেন্সি এসওএস সুবিধা চালু করে অ্যাপল।