সুপেয় পানি ও খাবার সংকটে চট্টগ্রামের পানিবন্দি মানুষ

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম। জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার কয়েক লাখ বাসিন্দা এখন পানিবন্দি হয়ে আছেন। বন্যাকবলিত এসব এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র, পার্শ্ববর্তী স্কুল কিংবা উঁচু দালানে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার ও সুপেয় পানির সংকট।

এছাড়া, বিদ্যুতের সাবস্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় তিন দিন ধরে নেই বিদ্যুৎ। এসব এলাকায় নেই মোবাইল নেটওয়ার্কও। ফলে কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। জীবিকার তাগিদে যারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তারা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে চিন্তিত। এছাড়া বন্যাকবলিত কোনো কোনো এলাকায় ডাকাতি কিংবা চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ভারী বর্ষণ এবং সাংগু, ডলু নদী ও হাঙ্গর খাল দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এমন ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দুই উপজেলার মধ্যে পুরো সাতকানিয়া পানিতে তলিয়ে গেছে। সাতকানিয়ার উপজেলা থানা, ভূমি অফিস, পৌরসভাসহ প্রায় ১৭টি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। এই উপজেলার বুক চিরে যাওয়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ওপর হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ পানি রয়েছে। মহাসড়কের মৌলভীর দোকান থেকে শুরু করে কেরানিহাট পর্যন্ত এলাকা অংশ পানির নিচে। ফলে এ এলাকায় এখনো যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। কোথাও কোথাও পানির মধ্যে সড়কেই আটকে আছে যানবাহন।

এছাড়া সাতকানিয়ারা কেরানিহাট থেকে বান্দরবান সড়ক দিয়েও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই সড়কের কোনো কোনো অংশ গলা পানিতে তলিয়ে আছে। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজেও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নেটওয়ার্ক না থাকায় কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না। এছাড়া লোহাগাড়ার উপজেলার আমিরাবাদ, পদুয়াসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে বিভিন্ন এলাকায় পানি আসা শুরু করে। মঙ্গলবার ভোরে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়। এদিন ভোর থেকে বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। আজ (বুধবার) পানি একটু নামতে শুরু করলে মহাসড়কটিতে কোথাও কোথাও হাঁটু এবং কোমর পর্যন্ত পানি ছিল। এসময় লোকজন বিচ্ছিন্নভাবে আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়ক ব্যবহার করেছেন।

চট্টগ্রাম হাইওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাসিম খান বুধবার বিকেলে বলেন, পানি নামতে শুরু করলে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে এখনো হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি রয়েছে। এ কারণে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ভ্যান কিংবা পিকআপ পানির মধ্যেই চলছে। বৃষ্টি না হলে আগামীকাল যান চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ