ভারতে যৌন পেশাকে আর বেআইনি বলা যাবে না। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) এই পেশা নিয়ে এমনই নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাকি পেশার মতো যৌন পেশাও একটি পেশা এবং যৌনকর্মীদেরও সমান অধিকার ও মর্যাদা রয়েছে। অর্থাৎ দেহ ব্যবসাকে আর পাঁচটা সাধারণ কাজের মতো ‘পেশা’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে যৌনকর্মীদের কাজে হস্তক্ষেপ বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ না করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের শীর্ষ এই আদালত। শুক্রবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের অধীনে তিন সদস্যের বেঞ্চ যৌন পেশা ও যৌনকর্মীদের সম্পর্কে মোট ছয়টি নির্দেশনা জারি করে। এই নির্দেশনার মাধ্যমে যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষা করা যাবে বলেই মত সুপ্রিম কোর্টের। বেঞ্চের বাকি দুই বিচারক হচ্ছেন বিচারপতি বিআর গভই এবং বিচারপতি এএস বোপান্না।
তিন বিচারপতির মাধ্যমে গঠিত বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আইনের চোখে যৌনকর্মীরাও সমান নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রাখে। যদি একজন যৌনকর্মী প্রাপ্তবয়স্ক হন এবং নিজের সম্মতিতেই যৌন পেশায় যুক্ত হন, তবে পুলিশ বিনা কারণে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারী ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাবে না।’
ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত আরও জানায়, দেশের সকল নাগরিকেরই মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করার অধিকার রয়েছে। আর তাই যৌনপল্লীতে তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় অকারণে যৌনকর্মীদের হেনস্থা, গ্রেপ্তার করা উচিত নয়। অবশ্য যৌন পেশাকে বৈধ বললেও যৌনপল্লী চালানো যে বেআইনি, সে কথাও মনে করিয়ে দেয় প্রতিবেশী এই দেশটির শীর্ষ আদালত।
এদিকে যৌনকর্মীদের মধ্যে যারা সন্তানের মা, তাদের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষণ রেখেছেন ভারতীয় আদালত। তিন বিচারকের বেঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধুমাত্র যৌন পেশার সঙ্গে যুক্ত, এই যুক্তিতে সন্তানকে তার মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া অনুচিত। বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া সন্তানদের মায়ের কাছ থেকে সরানো যাবে না বলেই জানিয়েছে আদালত।