যুক্তরাষ্ট্রে বার্ড ফ্লুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবে মুরগী মৃত্যুর রেকর্ড

বার্ড ফ্লু হিসেবে পরিচিত অতি-সংক্রামক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার দ্রুত বিস্তারে যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছরে রেকর্ড সংখ্যক মুরগী ও টার্কির মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, কৃষকরা আগে এই ভাইরাসটির যে ধরন বা রূপের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, এবারে তার চেয়ে ভিন্ন এবং জটিল একটি ধরন বন্য পশুপাখিকে বেশি সংক্রমিত করছে। পরবর্তীতে এই ভাইরাসের বিস্তার আরও দ্রুত ঘটছে।

চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৪ কোটি ৭০ লাখের বেশি মুরগী মারা গেছে অথবা মেরে ফেলা হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মুরগী রপ্তানি নিষিদ্ধ, ডিম ও টার্কির উৎপাদন হ্রাস এবং এর দাম রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার এই প্রাদুর্ভাব দেশটির ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতিতে হিমশিম খাওয়া ভোক্তাদের অর্থনৈতিক যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণী-স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল ২০১৫ সালে। ওই বছর দেশটিতে প্রাণঘাতী এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাবে ৫ কোটি ৫ লাখ মুরগী মারা যায়।

অতীতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় লাখ লাখ পাখি, হাঁস ও মুরগিকে মেরে ফেলা হয়। বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে পোল্ট্রি শিল্পের বাণিজ্যে প্রায়ই বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) প্রধান ভেটেরিনারি কর্মকর্তা রোজমেরি সিফোর্ড বলেছেন, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার অতি-সংক্রামক এইচ৫এন১ ধরনের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন কৃষকরা। সাধারণত ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব হ্রাস পেলেও গ্রীষ্মকালে এই ধরনটি টিকে থাকে।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এইচ৫এন১ এর মতো প্রায় একই রকমের আরেকটি ধরন ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ধরনটি গুয়াংডং বংশীয় নামে পরিচিত। ইউরোপ ইতোমধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জোর ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এই অঞ্চলে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ৫ কোটি মুরগী মেরে ফেলা হয়েছে।

সিফোর্ড বলেন, কর্মকর্তারা অতীতের তুলনায় বর্তমানে হাঁসের মতো বন্যপ্রাণীর শরীরে এইচ৫এন১ ধরনটি বেশি পরিমাণে শনাক্ত করছেন। মনে হচ্ছে বন্যপ্রাণীর শরীরে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জোর এই ধরনটি দীর্ঘসময় বেঁচে থাকে। আগামী বছরের গ্রীষ্ম পর্যন্ত সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন মার্কিন এই কর্মকর্তা।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ