হিমালয় জয় করে দেশে ফেরার পর থেকেই একের পর এক বীরোচিত সংবর্ধনায় সিক্ত হচ্ছেন বাংলার নারী ফুটবলাররা। সাফজয়ী দলের কলসিন্দুরের আট ফুটবলকন্যা নিজেদের জেলা ময়মনসিংহে ফিরেও পাচ্ছেন অভ্যর্থনা ও ভালোবাসা। এবার জেলা পুলিশের বর্ণিল সংবর্ধনা পেলেন আট নারী ফুটবলার সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, শামছুন্নাহার (সিনিয়র), শিউলি আজিম, শামছুন্নাহার (জুনিয়র), তহুরা খাতুন, সাজেদা আক্তার ও মার্জিয়া আক্তার।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর টাউন হল মোড়ের পুলিশ অফিসার্স মেস থেকে ফুলের মালা পরিয়ে দুটি ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিশেষ নিরাপত্তায় পুলিশ লাইন্সের সংবর্ধনাস্থলে নেওয়া হয় নারী ফুটবলার ও তাদের গড়ে তোলার কারিগরদের। মঞ্চে উঠার পর ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এছাড়াও তাদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। পুলিশের এমন আয়োজনে আপ্লুত এই ফুটবলকন্যারা।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞার সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও বক্তব্য দেন নারী ফুটবলার গড়ার কারিগর কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী শীল, কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ্দিন, কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নারী ফুটবল টিমের ম্যানেজার মালা রানী সরকার, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম দেলোয়ার হোসেন মুকুল, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহম্মেদ রানা, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি সাজ্জাত জাহান চৌধুরী শাহীন, সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম, নারী ফুটবলার সানজিদা আক্তার ও মারিয়া মান্ডা।
এ সময় জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং ফুটবলকন্যাদের পরিবারের সদস্যসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফুটবলার সানজিদা আক্তার বলেন, নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে মানুষের এতো ভালোবাসা পাব তা কোনো দিন ভাবতে পারিনি। এমন সংবর্ধনা আমাদের ভালো খেলার স্পৃহা বাড়িয়ে দেবে।
আরেক ফুটবলার মারিয়া মান্ডা বলেন, নিজ জেলায় দুই দিনের বর্ণিল আয়োজনে আমরা মুগ্ধ। জেলা পুলিশ যেভাবে সুশৃঙ্খল আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের বরণ করেছে তাতে আমরা খুবই আনন্দিত।
কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নারী ফুটবল টিমের ম্যানেজার মালা রানী সরকার, এই সংবর্ধনা আরও ফুটবলার তৈরিতে মেয়েদের অনুপ্রাণিত করবে। আমার প্রতিষ্ঠানে আরও ৫০ জন ফুটবলার আছে। তারাও সানজিদাদের এই জয় দেখে উজ্জীবিত হবে। একদিন তারা বিশ্ব জয় করবে এটাই আমার প্রত্যাশা।
পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা বলেন, হিমালয় জয় করা মেয়েদের সংবর্ধিত করতে পেরে আমরা নিজেরা গর্বিত ও আনন্দিত। ফুটবলের উন্নয়নে মেয়েদের পাশে থেকে জেলা পুলিশ তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। কারণ এটি শুধু ফুটবলের বিজয়ই না, এটি নারীদের এগিয়ে যাওয়ার একটি স্বার্থক রূপায়ন।
পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদৌলতে আজ মেয়েরা প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে হিমালয় জয় করেছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু না হলে মেয়েদের কারণে দেশের এত সুনাম হতো না। আমি প্রত্যাশা করি, মেয়েরা তাদের এ অর্জন ধরে রাখবে ও বীরদর্পে এগিয়ে যাবে।