টানাপোড়েনের আভাস মিলেছিল জি-২০ সম্মেলনেই

কানাডার শিখ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারত ও কানাডার। তবে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হঠাৎ করেই এই সংকট শুরু হয়েছে— এমন নয়; দু-সপ্তাহ আগে শেষ হওয়া জি-২০ সম্মেলনেই তার আভাস মিলেছিল।

গত ৯-১০ সেপ্টেম্বর রাজধানী নয়াদিল্লিতে বসেছিল জি-২০ জোটের সম্মেলন। বিশ্বের প্রধান এই জোটের সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, তুরস্ক, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোসহ বেশ কিছু দেশের সরকারপ্রধান ও তাদের প্রতিনিধিদল। নয়াদিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী গুরুগাঁওয়ের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলের প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট ও ভিভিআইপি কক্ষগুলো বরাদ্দ করা হয়েছিল তাদের জন্য। যথাযথ ও সম্পূর্ণ নিরাপত্তা প্রটোকল অনুসারে সাজানো হয়েছিল এসব স্যুট-কক্ষ।

প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের থাকার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল রাজধানীর ফায়ার ব্রিগেড লেন এলাকায় অবস্থিত ললিত হোটেল। অন্যান্য হোটেলের অতিথিদের মতো ট্রুডোর জন্য ওই হোটেলের একটি প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট এবং তার দলের সদস্যদের জন্য ভিভিআইপি রুম বরাদ্দ করা হয়।

কিন্তু ট্রুডো সেই স্যুট প্রত্যাখ্যান করে হোটেলের একটি নিয়মিত রুমে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন। তার প্রতিনিধিদলের সদস্যদের জন্যও একই ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন তিনি। সম্মেলন আয়োজন কমিটিকে এ প্রসঙ্গে ট্রুডো বলেছিলেন, ব্যয় কমানোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

নিজেদের উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ায় সম্মেলন শেষে নির্ধারিত সময়ে ভারত থেকে নিজ দেশে ফিরতে পারেননি ট্রুডো। ১০ সেপ্টেম্বর কানাডার ফিরতি ফ্লাইট ধরার কথা থাকলেও তাকে ভারত ছাড়তে হয়েছে ১২ তারিখ।

উড়োজাহাজ বিভ্রাটের সময় ট্রুডো ও তার প্রতিনিধিদলকে দেশে ফিরতে সহযোগিতা করার জন্য ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমান এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান ব্যাবহারের প্রস্তাব দিয়েছিল ভারতের সরকার। কিন্তু ট্রুডো সেই প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছিলেন।

এদিকে, ভারত ও কানাডার মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি ‘বাণিজ্য মিশন’ নিয়ে জি-২০ সম্মেলনের অবসরে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদি ও ট্রুডোর মধ্যে। আগামী অক্টোবরে কানাডার বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের ভারত সফরের কথাও ছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির অনাগ্রহের কারণে সেই বৈঠক হয়নি বলে জানা গেছে।

তবে উভয়ের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতা হয়েছে। সেই আলাপচারিতায় ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানি আন্দোলনের কানাডাপ্রবাসী নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য ট্রুডোকে মোদি মৃদু তিরস্কার করেছিলেন বলেও জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ