সিঙ্গাপুরের জাতীয় খাবার হচ্ছে মুরগি ভাত। সাদা ভাত আর জ্বাল দেওয়া মুরগির মাংস, সঙ্গে সবজি – এই হলো মুরগি ভাত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সিঙ্গাপুরের মুরগির চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়।
আর সেখানেই বিপদে পড়েছে দেশটি। মালয়েশিয়া মুরগি রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির জাতীয় খাবার।
সিঙ্গাপুর ফুড এজেন্সির হিসেবে, দেশটি মালয়েশিয়া থেকে ৩৪ শতাংশ, ব্রাজিল থেকে ৪৯ শতাংশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১২ শতাংশ মুরগি আমদানি করে থাকে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ, খারাপ আবহাওয়া ও করোনা মহামারির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় মালয়েশিয়ায় মুরগির খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। সে কারণে বুধবার থেকে মুরগি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি।
মুরগি ভাত বিক্রি করে এমন দোকানের মালিক ডেনিয়েল তান বলছেন রান্নার জন্য তিনি মালয়েশিয়া থেকে জীবন্ত মুরগি কিনে আনেন। কিন্তু এখন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় তাকে হয়তো ব্রাজিল থেকে আসা ফ্রোজেন মুরগি ব্যবহার করতে হবে, যা খাবারের স্বাদ কমিয়ে দিবে। সে কারণে ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তান।
মুরগির খাবার হিসেবে সাধারণত সয়াবিন ও শস্যকণা দেওয়া হয়। মালয়েশিয়া এগুলো আমদানি করে থাকে। বর্তমানে এগুলোর সংকট দেখা দেওয়ায় বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু বিকল্প খাবারের মান কম হওয়ায় মুরগি সময়মতো বড় হচ্ছে না। এতে খামারিরা বিপদে পড়ছেন।
খামার মালিক সায়জুল আব্দুল্লাহ সামিল জুলকাফলি জানান, তিনি সাধারণত বছরে সাতবার ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেন। কিন্তু এবার মুরগির খাবারের মান কম হওয়ায় মুরগি সময়মতো বড় হতে পারছে না বলে তাকে হয়তো পাঁচবার মুরগি বিক্রি করতে হবে।
জুলকাফলি বলেন, করোনা মহামারির কারণে এমনিতেই খামার পরিচালনা খরচ বেড়ে গেছে। তার সঙ্গে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা যোগ হওয়ায় খামারিদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।
মালয়েশিয়া সরকার অবশ্য খামার মালিকদের জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছে।