দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন গৌরবের মুহূর্ত কি খুব বেশি আছে? বড় বড় অনেক দলকেই সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। কয়েকটি দলকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদও পেয়েছে টাইগাররা। তবে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করার মতো কীর্তি তো ছিল না!
তবে সেই অসাধ্যই সাধন করেছে বাংলাদেশ। শক্তি ও নামের ভারে যোজন যোজন এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ডকে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে সব ম্যাচ হারিয়ে বাংলাওয়াশ করেছে টাইগাররা।
সাদা বলের ক্রিকেটে দুই ফরম্যাটেই বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। টি-২০ সিরিজ শুরুর আগে মুখোমুখি দেখায় কোনো জয়ের স্বাদ ছিল না বাংলাদেশের। ফলে হট ফেবারিট হিসেবেই টাইগারদের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নেমেছিল ইংলিশরা।
সেই দলকেই মাটিতে নামাল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে দুই উইকেটে ১৫৮ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ১৪২ রানের বেশি করতে পারেনি ইংল্যান্ড।
১৬ রানে জয়ের মাধ্যমে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে সাকিব আল হাসানের দল।
ইংল্যান্ডের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে তানভীরের প্রথম বলেই চার হাঁকান ডেভিড মালান। পরের বলে সিঙ্গেল নেন তিনি। এরপর মুখোমুখি প্রথম ডেলিভারিতেই স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ফিল সল্ট।
তার বিদায়ের পর অবশ্য আর ভুল করেননি জস বাটলার ও ডেভিড মালান। দুজনই দেখেশুনে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। একপর্যায়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১৩ ওভারে এক উইকেটে ১০০ রান।
এ সময় জয়ের পথেই ছিল ইংল্যান্ড। এ অবস্থা থকে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। টাইগার বোলারদের তোপে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় থ্রি লায়ন্সরা। পরপর দুই বলে মালান ও বাটলার ফেরার পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি দলটি।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন মালান। বাটলার খেলেন ৪০ রানের ইনিংস। শেষদিকে ক্রিস ওকসের ১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস শুধু হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন দুটি এবং তানভীর, সাকিব ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। ইংলিশদের বাংলাওয়াশ করার লক্ষ্যে দুই পরিবর্তন নিয়ে নামে বাংলাদেশ। শামীম পাটোয়ারি দলে ফেরার পাশাপাশি অভিষেক হয়েছে তানভীর আহমেদের।
বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। শুরু থেকেই দেখে খেলার পাশাপাশি বাজে বল সীমানা ছাড়া করেছেন দুজন। সেই ধারাবাহিকতায় দুজনের ব্যাটে প্রথমবারের মতো পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি পায় টাইগাররা।
দারুণ শুরুর পর দলীয় ৫৫ রানে বিদায় নেন রনি। আদিল রশিদকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তার হাতেই ধরা পড়েন তিনি। এর আগে ২২ বলে করেন ২৪ রান। রনি বিদায় নিলেও অন্যপ্রান্তে আপন গতিতে খেলতে থাকেন লিটন।
সেই ধারাবাহিকতায় ৪১ বলে ফিফটির দেখা পেয়ে যান লিটন। ফিফটির পর আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এ ওপেনার। একপর্যায়ে নিজের আগের ক্যারিয়ারসেরা ৬৯ রান পেরিয়ে যান লিটন। তবে এরপর আর বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি তিনি।
রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ৭৩ রানে সাজঘরে ফেরেন লিটন। নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন চেনা ফর্মে। তিনি ৩৬ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে ৬ বলে ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব আল হাসান।