ফেনী জেলাজুড়ে এখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বিনোদন কেন্দ্রে আড্ডা দেওয়া স্কুল-কলেজের ২৫ শিক্ষার্থীকে আটক করা নিয়ে। তাদের অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকাও অভিযোগও উঠেছে। এতে পুলিশের প্রশংসা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল ও অভিভাবকরা।
গত ২৯ মে দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের মহিপাল বিজয় সিংহ দিঘীর পাড়ে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১১ জন ছাত্রী ও ১৪ জন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। এরপর গাড়িতে তুলে তাদের সদর থানায় নেওয়া হয়। পরে অভিভাবকদের ডেকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয় সবাইকে। তাদের বেশির ভাগই অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মান্নান মিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, আমাদের ছেলেরা কী করে, তা আমাদের জানা হয় না। আমার ছেলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই সময়টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এ সময়ে ছেলে-মেয়েরা মানসিকভাবে বাড়তে থাকে। তাদের অনেক পরিবর্তন আসে। এ সময় ছেলে-মেয়েরা অভিভাবকদের থেকে আড়াল হয়। পুলিশের এমন অভিযান অব্যাহত থাকলে আমাদের জন্য ভালো হয়। এমন কাজের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা পর্যায়ক্রমে আলাদা গ্রুপ তৈরি করে। তাদের ড্রেস কোড থাকে, আলাদা হেয়ার স্টাইল থাকে, তাদের চালচলনও ভিন্ন। তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। তারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। নানাভাবে তারা অর্থ সংস্থানের চেষ্টা করে। এলাকার কোনো বড় ভাইয়ের সহযোগী শক্তি হিসেবেও তারা কাজ করে। কিশোরদের একত্র করে কতিপয় ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত করছেন।
তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। সহজ ও অল্প খরচে কিশোরদের দিয়ে তারা অপরাধ করাচ্ছে। অস্ত্রবাজি, মাদক ও হত্যাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা কিশোরদের ব্যবহার করে। এ বিষয়ে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। তাদের কিছু বললেই প্রকাশ্য হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি ফেনীতে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা এমন তথ্য জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলার কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধজগতে। শুধু জেলার ভেতরেই সীমাবদ্ধ নেই, সংগঠনের মতো কমিটি করেছে কিশোর গ্যাংয়ের কথিত নেতা-কর্মীরা। তবে তাদের বেশির ভাগই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।