মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বরখাস্ত নেত্রী নুপুর শর্মার সমর্থনে অনলাইনে পোস্ট করায় ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন বলে ভারতের এক যুবক অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, নুপুর শর্মার সমর্থনে হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস হিসাবে একটি ভিডিও শেয়ার করায় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
ওই যুবক ভারতের বিহার রাজ্যের সীতামারহি শহরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এদিকে, নুপুর শর্মার সমর্থনে পোস্ট দেওয়ায় হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করা হলেও এই ঘটনার সঙ্গে ওই বিষয়টির কোনো যোগসূত্র নেই বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় একদল লোক ওই যুবককে ছুরিকাঘাত করে।
এনডিটিভি বলছে, অঙ্কিত ঝা নামের ওই ভারতীয় যুবক বিহারের দারভাঙ্গার একটি স্থানীয় নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার দাবি, হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস হিসাবে নিজের আপলোড করা ভিডিওটি দেখার সময় কেউ তার পিঠে ছুরিকাঘাত করে।
গত ১৫ জুলাই এই ঘটনা ঘটলেও পরদিন ভুক্তভোগী চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন অঙ্কিত ঝা। পরে প্রধান আসামিদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
অঙ্কিত ঝার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করার পর সীতামারহির পুলিশ সুপার হর কিশোর রাই বলেন, ‘গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় নানপুর থানা এলাকায় একটি পানের দোকানে সিগারেটের ধোঁয়া নিয়ে তিন থেকে চারজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপরই ছুরিকাঘাতের এই ঘটনা ঘটে। তবে গতকাল বিকেলে তিনি (আহত যুবক) নুপুর শর্মাকে জড়িয়ে সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা সবাই আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা এবং একে অপরের পরিচিত। তারা রাস্তার পাশে একটি পানের দোকানে একসঙ্গে ধূমপান করার সময় এই ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।
তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি অভিযুক্তদের মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। আর এর রেশ ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাইরের বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করে। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দেন।