কখন ওমরা করা যাবে, কী ফজিলত

একজন মুমিনের জন্য পবিত্র রমজান মাস হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়ার সুবর্ণ সুযোগের মাস। এ মাসে বান্দা আল্লাহর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অধিক ইবাদতের মাধ্যমে তার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করতে পারে। বহুমুখী ইবাদতের সমাহার ঘটিয়ে, রমজানের যথাযথ হক আদায় করে জান্নাতের পথে এগিয়ে যেতে পারে বান্দা। ইবাদতের মাস রমজানে অন্যান্য ইবাদতের সঙ্গে আমরা ওমরা পালনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি।

মজানে মহান ইবাদত ‘ওমরা’ পালনের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে জান্নাতের পথে এগিয়ে যেতে পারে। ওমরা পালন মর্যাদাপূর্ণ একটি স্বতন্ত্র ইবাদত হলেও রমজানে ওমরা পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুল (সা.) বলেন, রমজানে ওমরা পালন করা হজের সমতুল্য ইবাদত (সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস নং-২৯৯৩)।

ওমরা শব্দের আভিধানিক অর্থ জিয়ারত করা, দর্শন করা, ভ্রমণ করা। আর শরিয়তের পরিভাষায় শরিয়ত নির্দেশিত বিশেষ পদ্ধতিতে ইহরামসহ, কাবা শরীফের চতুর্দিকে তাওয়াফ করা, ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া’ পাহাড়দ্বয়ের মধ্যস্থলে সায়ি করা এবং মাথা মুণ্ডানোকে ওমরা বলে।

কখন ওমরা করা যাবে

ওমরা বছরের যে কোনো সময় পালন করা জায়েজ। শুধু পাঁচ দিন অর্থাৎ ৯ থেকে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত ওমরার ইহরাম বাঁধা মাকরুহে তাহরিমি।

ওমরা পালনের ফজিলত

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, এক ওমরা থেকে পরবর্তী ওমরা পর্যন্ত মাঝখানের গুনাহগুলোর জন্য কাফফারাস্বরূপ। (সহিহ বোখারি, হাদিস নং-১৬৮৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৩৩৫৫)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরা আদায় করো। কেননা হজ ও ওমরা দরিদ্রতাবিমোচন ও গুনাহ দূর করে দেয়, ঠিক সেভাবে, যেভাবে হাপরের আগুন লোহা, স্বর্ণ ও রুপা থেকে ময়লা দূর করে দেয়।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-৮১০)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদকারী, হজ পালনকারী এবং ওমরা পালনকারীÑতারা সবাই আল্লাহর প্রতিনিধি। আল্লাহ তাদের ডাক দিয়েছেন, তারা সেই ডাকে সাড়া দিয়েছে। সুতরাং তারা আল্লাহর কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে, আল্লাহ অবশ্যই তাদের তা প্রদান করবেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-২৯৯৩)

ওমরার বিধান : জীবনে একবার ওমরা করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। তা ছাড়া তা যখনই করা হোক, তার জন্য প্রতিদান ও বরকত রয়েছে। আর রমজানে ওমরা পালন করা মুস্তাহাব। হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন রাসুল (সা.) হজ থেকে ফিরে এলেন, উম্মে সিনান নামের আনসারি মহিলা সাহাবিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিসে তোমাকে হজ পালনে বাধা প্রদান করেছিল?’ তিনি জবাবে বললেন, ‘আমাদের পানি টানার দুটি উট আছে, একটিতে সাওয়ার হয়ে ছেলে ও তার বাবা হজ আদায় করতে গেছেন, আর অপরটি আমাদের জমিতে পানি সিঞ্চনের কাজে আটক আছে।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘রমজান মাস এলে তুমি ওমরা করে নিও। কেননা রমজান মাসে ওমরা করা হজের সমান মর্যাদা রাখে।’ (সহিহ বোখারি, হাদিস নং-১৬৯০; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৩০৯৭)

তাই আসুন, পবিত্র রমজানে ওমরা পালনের মাধ্যমে আমরাও ‘আল্লাহর প্রিয় বান্দা’ হওয়ার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন, আমিন।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ