দাউদ ইব্রাহিম ও তার সহযোগীদের মাথার দাম ঘোষণা করল ভারত

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম ও তার নেতৃত্বাধীন অপরাধ সিন্ডিকেট ডি-কোম্পানির শীর্ষ চার সদস্যের মাথার দাম ঘোষণা করেছে ভারতের সরকার। এই চার সদস্য হলেন— ছোটা শাকিল ওরফে শাকিল শেখ, জাভেদ প্যাটেল ওরফে জাভেদ চিকনা, ইব্রাহিম মুশতাক আবদুল রাজ্জাক মেমন ওরফে টাইগার মেমন এবং হাজি আনিস ওরফে আনিস ইব্রাহিম শেখ।

শুক্রবার ভারতের শীর্ষ তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এক প্রেসনোটে জানিয়েছে সরকারের এই ঘোষণা নিশ্চিত করেছে। প্রেসনোটের তথ্য অনুযায়ী— দাউদ ইব্রাহিমের মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছে নগদ ২৫ লাখ রুপি।

সেই সঙ্গে ছোটা শাকিলের মাথার দাম ২০ লাখ রুপি এবং জাভেদ প্যাটেল, টাইগার মেমন মাথার দাম ১৫ লাখ রুপি ও হাজি আনিস— প্রত্যেকের মাথার দাম ১৫ লাখ রুপি নির্ধারণ করা হয়েছে।

দাউদ ইব্রাহিম ও তার ডি-কোম্পানির শীর্ষ সহযোগীদের সম্পর্কে সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়, ‘দাউদ ইব্রাহিম ও তার আন্ডারওয়ার্ল্ড সিন্ডিকেট ডি-কোম্পানির সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, চোরাচালান, মাদক বাণিজ্য, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, নকল বা জাল মুদ্রা তৈরি ও বাজারে ছাড়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত। ডি-কোম্পানির বিরুদ্ধে লস্কর-ই তৈয়বা (এলইটি), জইশ-ই মোহাম্মদ (জেইএম) এবং আলকায়দা মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ককে নিয়মিত আর্থিক তহবিল ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের অভিযোগও রয়েছে ডি-কোম্পানির বিরুদ্ধে।’

সরকার যদি কোনো অপরাধীর মাথার দাম ঘোষণা করে, তার অর্থ— ওই অপরাধীকে যদি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা যদি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হাজির করে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি বা সংস্থাকে মাথার দামের নির্ধারিত অর্থ পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে।

তবে এনআইএর প্রেসনোটে বলা হয়েছে, দাউদ ইব্রাহিম ও তার সহযোগীরা কে কোথায় আছেন— সে সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য যদি কেউ এনআইকে দেন, তাহলেও চলবে। সরকারের নির্ধারিত পুরস্কার দেওয়া হবে সেই তথ্যদাতাকে। তধ্য প্রদানের জন্য দু’টি ইমেইল অ্যাড্রেসও দিয়েছে এনআইএ।

দাউদ ইব্রাহিমের পুরো নাম দাউদ ইব্রাহিম কাসকার। ১৯৫৫ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার মামকা গ্রামে জন্ম নেন। তার বাবা ইব্রাহিম কাসকার ছিলেন পুলিশের হেড কনস্টেবল।

কিশোর বয়স থেকেই ছিনতাই, মারপিটের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন দাউদ। কৈশোর পেরুনোর পর রত্নগিরি থেকে মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান। সেখানে মুম্বাইয়ের তৎকালীন শীর্ষ সন্ত্রাসী করিম লালার গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হন।

গত শতকের আশির দশকের শেষ দিকে করিম লালার গ্যাং থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান দাউদ, গঠন করেন নিজের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ডি-কোম্পানি। গঠনের অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ত্রাস হিসেবে দেখা দেয় দাউদের ডি-কোম্পানি। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল দাউদ এবং তার সহযোগীদের।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ