দাউদ ইব্রাহিমকে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি

গুরুতর অসুস্থ হয়ে পাকিস্তানের করাচির একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধী ও ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’ হিসেবে পরিচিত দাউদ ইব্রাহিম। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দাউদ ইব্রাহিমের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে কে বা কারা তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করতে চেয়েছে তা জানা যায়নি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস আলজেবরা জানিয়েছে, অজ্ঞাত ব্যক্তির বিষ প্রয়োগে মারা গেছে দাউদ ইব্রাহিম। করাচির আগা খান হাসপাতাল থেকে সোমবার সকালে বিশেষ নিরাপত্তায় ৫টি সামরিক যান বের হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক যানটি একটি বিশেষ কবরস্থানে প্রবেশ করেছে। সংবাদ মাধ্যমটি মনে করছে এটি দাউদ ইব্রাহীমের লাশ।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, করাচির হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে দাউদকে। হাসপাতালের যে অংশে তিনি আছেন, সেখানে আর কোনো রোগীকে রাখা হয়নি। কাউকে কাছেও যেতে দেয়া হচ্ছে না। গত দু’দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন দাউদ।

৬৮ বছর বয়সী এই আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন হঠাৎ কেন অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তার বয়সজনিত শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে কিনা, সামাজিক মাধ্যমে তা নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দাউদকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। সেই কারণেই তিনি গুরুতর অসুস্থ। তবে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি কোনো পক্ষ থেকে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমেও বিষপ্রয়োগের তথ্য নিয়ে জল্পনা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই করাচিতে বসবাস করছেন দাউদ ইব্রাহিম। গত অক্টোবরে জানা গিয়েছিল, দাউদ ইব্রাহিম কাসকরকে পাকিস্তানের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (আইএসআই) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ডেপুটি ডিরেক্টর) পদে বসানো হয়েছে।

আইএসআই’র সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত কয়েক দশকে আইএসআইকে নানাভাবে অনেক উপকৃত করেছেন দাউদ ইব্রাহিম। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বাইয়ে প্রাণঘাতী সিরিজ বোমা হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন দাউদ ইব্রাহিম। ওই হামলায় ২৬৭ জন নিহত হয়েছিলেন। এরপর তিনি দুবাই হয়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। করাচিতে ঘাঁটি তৈরি করেন তিনি। বারবার আইএসআইয়ের সঙ্গে দাউদের যোগ নিয়ে সরব হয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থা। যদিও পাকিস্তান বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানের বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন এবং বিশ্বজুড়ে তাদের সহযোগীদের হয়ে কাজ করেছেন। তিনি আল-কায়েদা, ওসামা বিন লাদেন ও তালেবানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মাদক চোরাচালানের বিশাল সাম্রাজ্যের সুবিধার্থে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আসছেন দাউদ। এজন্য জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ