বহু বছরের প্রাচীন প্রথা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আইন পাস করে কুকুরের মাংস খাওয়া, বাজারজাত এবং বিক্রি বন্ধ করল দক্ষিণ কোরিয়া।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দেশটির সংসদে এ সংক্রান্ত উত্থাপিত আইন পাস হয়। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন আইন পাসের মাধ্যমে ২০২৭ সালের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুর জবাই, মাংস বিক্রি এবং খাওয়া নিষিদ্ধ করবে দেশটির সরকার।
নতুন এ আইনে বলা হয়েছে আইন লঙ্ঘন করে কুকুর জবাই করলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং কুকুরের মাংস বিক্রি করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল হতে পারে। তবে কুকুরের মাংস খাওয়া বেআইনি হবে না।
আইনটিতে যারা কুকুরের মাংসের ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের ব্যবসা বা জীবন পরিবর্তনের লক্ষ্যে সাহায্য করার জন্য সরকারিভাবে ভর্তুকি প্রদানের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
তবে নতুন এ আইন কার্যকরে তিন বছর সময় দেয়া হয়েছে, যাতে করে এ সময়ের মধ্যে কুকুরের মাংস ব্যবসার সাথে জড়িতরা এবং রেস্তোঁরা মালিকরা কর্মসংস্থান এবং আয়ের বিকল্প উৎস খুঁজে পেতে পারে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের ব্যবসা পরিবর্তনের জন্য একটি পরিকল্পনা জমা দিতে হবে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে,২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রায় ১১৫০টি কুকুরের খামার এবং প্রায় ১৬০০টি রেস্তোরাঁ রয়েছে যারা কুকুরের মাংস দিয়ে তৈরি খাবার বিক্রি করে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯৮০ এর এর দশক থেকেই পূর্ববর্তী সরকাররা কুকুরের মাংস নিষিদ্ধ করার নানারকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং ফার্স্ট লেডি কিম কেওন হি পশুপ্রেমী হিসেবে পরিচিত এবং তারা নিজেরাও কুকুরের মাংস খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
নতুন এ আইন পাসের প্রশংসা করেছে দেশটির প্রাণী অধিকার গোষ্ঠী, যারা দীর্ঘদিন ধরে কুকুরের মাংস খাওয়া ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন।
কুকুরের মাংস খাওয়াকে প্রাচীন কোরিয়া থেকেই শরীরে শক্তি বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হত। তবে বর্তমান সময়ে প্রাণী অধিকার নিয়ে চর্চা বৃদ্ধি এবং কোরিয়ানরাও কুকুরকে পোষা প্রাণী হিসেবে পালতে শুরু করায় কুকুরের মাংস খাওয়া অনেকটাই কমে এসেছে দেশটিতে। এবার আইন করে একবারেই নিষিদ্ধ করল সরকার।