রংপুরে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ ও হত্যার দায়ে পাঁচজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ মর্ণেয়া গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমান (২৮), হান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৭), মতিয়ার রহমান মুন্সির ছেলে নাজির হোসেন (৩২), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (২৯) এবং আমিনুর রহমান (২৯)। এদের মধ্যে আলমগীর হোসেন পলাতক। বাকি চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার প্রধান আসামি অভিযুক্ত আবুজার রহমানের সঙ্গে ভুক্তভোগী কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে অস্বীকৃতি জানান আবুজার। ওই কিশোরী তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি পরিবারসহ গ্রামাবাসীকে জানিয়ে দেবে হুমকি দিলে প্রেমিক আবুজার তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ১৪ মে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা ও মা লালমনিরহাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় ওই কিশোরী ও তার ভাগনি বাড়িতে একা ছিল। এ সুযোগে আবুজার সহযোগীদের নিয়ে সন্ধ্যায় প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পাশের একটি ক্ষেতে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ওইদিন রাতে তার বাবা-মা বাড়িতে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেন। পরদিন সকালে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ধইঞ্চা ক্ষেত থেকে মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৌহিদুল ইসলাম তদন্ত শেষে আবুজারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। প্রায় সাত বছর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর ১০ জনের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে বৃহস্পতিবার পাঁচ আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। এ রায় ভবিষ্যতে এমন অপরাধ করা থেকে মানুষকে বিরত রাখবে বলে আমি মনে করি।