দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তী সরকার। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ যান চলাচল ও পরিবহন ক্ষেত্রে নতুন করও বসানো হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বর্তমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকেরা মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। পেট্রোলের দাম ২০ থেকে ২৪ শতাংশ ও ডিজেলের দাম ৩৫ থেকে ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। পাশাপাশি, একজন ভোক্তা একদিনে সর্বোচ্চ কত পরিমাণ জ্বালানি তেলে কিনতে পারবেন— সে বিষয়ক নির্দেশনাও আসছে।’
‘এছাড়া তেলের বর্ধিত দামের সঙ্গে সঙ্গতি বেসরকরকারি পরিবহন মালিকদের ওপর নতুন করও বসানো হয়েছে।’
করোনা মহামারির কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস, বিদেশি ডলারের মজুত তলানিতে নেমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি ভয়াবহ রূপ নেওয়া এবং কিছুদিন আগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অযৌক্তিক কর কাট-ছাঁটের কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।
গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এটি শ্রীলঙ্কায় সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির রেকর্ড।
সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো এ পরিবহন ক্ষেত্রে নতুন কর আরোপের সিদ্ধান্ত জানানোর পর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতিতে লাগাম দেওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কর প্রশাসনে যে অচলাবস্থা চলছে, তা দূর করতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তবে সরকারের এই নীতি দেশটির অর্থনৈতিক সংকটে দুর্দশাগ্রস্ত দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর দৈননন্দিন জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠেবে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।
কলোম্বোভিত্তিক থিংকট্যাংক সংস্থা অ্যাডভোকেটা ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক ধননাথ ফেরনান্দো রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘সরকারের নতুন নীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন দরিদ্র লোকজন। এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান হলো দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরকার থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া।’