কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি করে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী শাম্মী আরা পারভীনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে অবৈধভাবে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ পেয়েছে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে আতাউর রহমান ও তার স্ত্রীকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে সম্পদের বিবরণী দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ঝোল দাগের আব্দুস সাত্তার প্রমাণিকের ছেলে আতাউর রহমান আতা। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। তার স্ত্রী শাম্মী আরা পারভীন কুষ্টিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ৩০ মার্চ দুদক কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাকারিয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করে এক হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তার স্ত্রী শাম্মী আরা পারভীনের বিরুদ্ধে স্বামীর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিষয়ে তথ্য জানতে নোটিশের কপি পাঠানো হয়েছে জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১২ সালের দিকে আতাউর রহমান আতা ভেড়ামারা থেকে কুষ্টিয়া শহরে আসেন। সেই সময় কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডে সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের একটি বাড়ি নির্মাণ কাজ চলছিল। চাচাতো ভাই আতা সেটির তদারকি করতেন। ৯ বছরের ব্যবধানে তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছে গেছেন।
২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই সময় থেকেই তিনি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠতে থাকেন। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। তারপর থেকেই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডার, হাটবাজার, বালুমহাল, সরকারি হাসপাতালের কেনাকাটা, নিয়োগ বাণিজ্য এক হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন আতাউর রহমান আতা। কয়েক বছরেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি।