ইনোসেন্ট-রাজার নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে হারাল জিম্বাবুয়ে

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আজ জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। যেখানে স্বাগতিকদের কাছে হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেটে ৩০৩ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে, হাতে ছিল আরো ১০ বল। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

জিম্বাবুয়ের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন রেগিস চাকাভা ও তারিসাই মুসাকান্দা। দুজনের কেউই দলকে আশানুরূপ শুরু এনে দিতে পারেননি। প্রথম দুই ওভারেই সাজঘরে ফেরেন তারা। প্রথম ওভারের শেষ বলে মুস্তাফিজুর রহমানের ডেলিভারিতে বোল্ড হন চাকাভা।

অন্যদিকে শরিফুল ইসলামের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনের তালুবন্দী হন মুসাকান্দা। এর আগে তারা করেন যথাক্রমে ২ ও ৪ রান। শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর পরিস্থিতি সামাল দেন ইনোসেন্ট কাইয়া ও ওয়েসলে মাধেভেরে। দুজনে গড়েন ৫৬ রানের জুটি।

রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন মাধেভেরে। এর আগে করেন ১৯ রান। এরপর কাইয়া ও সিকান্দার রাজা মিলে পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বলা যায় এই দুজনের কাছেই হেরেছে বাংলাদেশ।

বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে ১৯২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন ইনোসেন্ট ও রাজা। মাঝে দুজনেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের স্বাদ পাওয়া ইনোসেন্ট কাইয়া যখন ১১০ রানে সাজঘরে ফেরেন, ততক্ষণে জিম্বাবুয়ের জয় প্রায় নিশ্চিতই ছিল।

লুক জঙ্গে এসে ১৯ বলে ২৪ রানের ক্যামিও ইনিংসের মাধ্যমে জিম্বাবুয়ের জয় ত্বরান্বিত করেন। মিল্টন শুম্বাকে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন রাজা। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১৩৫ রানে।

বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, মেহেদী মিরাজ ও মোসাদ্দেক হোসেন প্রত্যেকেই একটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক রেগিস চাকাভা। এর মাধ্যমে চলতি সিরিজে দুই ফরম্যাট মিলিয়ে চার ম্যাচের সবগুলোতেই টস হারের মুখ দেখে টাইগাররা।

বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন তামিম ও লিটন। শুরু থেকেই দেখে খেলতে থাকেন দুজন। প্রথম ১০ ওভারে আসে ৫১ রান। ৭৯ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন তামিম ইকবাল। ২৪তম ওভারে সিকান্দার রাজাকে চার মেরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে ফরম্যাটে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

রাজার পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন তামিম। যার মাধ্যমে ভাঙে বাংলাদেশের ১১৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। তামিম ফেরার পর ফিফটি পূরণ করেন লিটন দাসও। যেভাবে খেলছিলেন, সেঞ্চুরি পাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। তার আগেই চোট পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

৭৫ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেই রূদ্রমূর্তি ধারণ করেন লিটন। পরবর্তী ১৪ বলে তিনি করেন ৩১ রান। এমতাবস্থায় সেঞ্চুরি যেন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। রাজার করা ইনিংসের ৩৪তম ওভারের প্রথম বল ১ রানের জন্য ঠেলে দিয়েই মাটিতে বসে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে।

এর আগে তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন এনামুল হক বিজয়। যিনি দীর্ঘ তিন বছর পর ফিরেছেন ওয়ানডে দলে। টেস্ট ও টি-২০তে ব্যর্থ হলেও প্রিয় ফরম্যাটে সুযোগ পেয়েই ফর্ম ফিরে পান বিজয়। ৪৭ বলে পূরন করেন ফিফটি। এ ম্যাচে অভিষিক্ত জিম্বাবুইয়ান পেসার ভিক্টর নিয়ুচির বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৬২ বলে ৭৩ রান করেন তিনি।

শেষ ওভারে মুশফিকুর রহিমও পান অর্ধশতকের দেখা। তিনি ৫২ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে নিয়ুচি ও রাজা একটি করে উইকেট শিকার করেন।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ