ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ আরও কমাল রাশিয়া

চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ কমানো শুরু করেছিল রাশিয়ার গ্যাস উত্তোলন ও বিপণনকারী সরকারি কোম্পানি গ্যাজপ্রম। বুধবার তা আরও কমে গেছে।

মঙ্গলবার ইউরোপ গ্যাস সংরক্ষণ নীতি ঘোষণা করার পরের দিন থেকে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবারাহের মূল পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-১ দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ স্বাভাবিকের তুলনায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

পাইপলাইনে বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে— উল্লেখ করে গত সপ্তাহে ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ সাময়িকভাবে হ্রাস করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল গ্যাজপ্রম। সেই অনুযায়ী, গত ২৩ জুলাই থেকে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের প্রধান পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-১ দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

ইউরোপ মহাদেশভুক্ত দেশসমূহের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) অবশ্য গত সপ্তাহেই অভিযোগ করেছিল— যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নয়, বরং ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর জারি করা বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ইউরোপকে বাধ্য করতে গ্যাসকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে অবশ্য এই অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

ইইউ’র সদস্যরাষ্ট্রগুলোর জ্বালানিমন্ত্রীরা মঙ্গলবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউ সদর দপ্তরে এক বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে রাশিয়া যদি গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তখন কীভাবে চলতে হবে, সে উপায় খুঁজতে গিয়ে গ্যাসের ব্যবহার কমাতে রাজি হন তারা।

বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সংকটের মুহূর্তে গ্যাসের ব্যবহার কমানোর সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ। এই বিবৃতি দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল পাইপলাইন দিয়ে গ্যাসের সরবরাহ আরও কমাল রাশিয়া।

ইউরোপে সহজে গ্যাস সরবরাহ করতে ইইউ ও গ্যাজপ্রমের যৌথ উদ্যোগে ২০০৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে চালু হয় নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন প্রকল্প। এ পাইপলাইনের মাধ্যমে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। পরে জার্মানি থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয় সেই গ্যাস।

গত জুনের মাঝামাঝি সময় থেকেই সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনে। প্রায় সময়েই গ্যাসের সরবরাহ আসছে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। ফলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে নানা সংকট দেখা দিয়েছে।

সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে জার্মানি। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটি একই সঙ্গে রাশিয়ার গ্যাসের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক।

তবে যে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জার্মানি থেকে ইউরোপের অন্যন্য দেশে গ্যাস পাঠানো হয়, তার শীর্ষ নির্বাহী ক্লাউস মুয়েলার রয়টার্সকে বলেছেন— বর্তমানে জার্মানির কাছে যে পরিমাণ গ্যাস সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, তা হিসেব করে ব্যয় করলে চলতি বছর বড় সংকট এড়াতে পারবে জার্মানি।

রয়টার্সকে মুয়েলার বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ার সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, সেক্ষেত্রে আমি বলব, বর্তমানে আমাদের সংরক্ষিত গ্যাসের পরিমাণ সন্তোষজনক; এবং শীত আসার আগে যদি এই সংরক্ষণ অব্যাহত রাখা যায়, তাহলে চলতি মৌসুমে জার্মানিকে বড় সংকটে পড়তে হবে না।’

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ