ইউক্রেনকে আরও ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এবারের সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে সাধারণ যুদ্ধাস্ত্র ও গোলাবারুদ, দূরপাল্লার যুদ্ধাস্ত্র, সাঁজোয়া যান, যুদ্ধক্ষেত্রে চিকিৎসাকাজে ব্যবহারযোগ্য পরিবহন প্রভৃতি।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে ইউক্রেনকে মোট ৮৮০ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ১ আগস্ট, সোমবারও ইউক্রেনকে ৫৫ কোটি ডলার মূল্যের দূরপাল্লার রকেট সহায়তা দিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন।
তবে এবার যে প্যাকেজটি দেওয়া হচ্ছে, সেটি আর্থিক হিসেবে এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে দেওয়া সহায়তা প্যাকেজসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড়। এ প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ, দূরপাল্লার রকেট হিমার্স (এইচআইমএআরএস) ও নাসামস (এনএএসএমস) এবং যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সেনাদের পরিবহনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি যান এম ওয়ান ওয়ান থ্রি মেডিকেল ট্রান্সপোর্ট। বর্তমান প্যাকেজে ৫০টি এম ওয়ান ওয়ান থ্রি ট্রান্সপোর্ট অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের ৩ জন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখনও সহায়তা প্যাকেজের ফাইলে স্বাক্ষর করেননি। তিনি স্বাক্ষর করলেই যতদ্রুত সম্ভব এসব অস্ত্র পাঠানো হবে ইউক্রেনে।
নতুন এই সহায়তা প্যাকেজে আরও উল্লেখ করা হয়েছে— জার্মানির রামস্টেইনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানঘাঁটির কাছে মার্কিন সেনাদের জন্য যে সামরিক হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের পাশপাশি ইউক্রেনের যুদ্ধাহত সেনাদেরও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণায়ালের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতা প্রেসিডেন্সিয়াল ড্রডাউন অথরিটির (পিডিএ) অধীনে পাঠানো হচ্ছে এই প্যাকেজ। পিডিএর আওতায় যদি কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনো দেশে সহায়তা পাঠানোর উদ্যোগ নেন, সেক্ষেত্রে তাকে দেশটির আইনসভা কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
শনিবার ১৬২তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।