গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে রংপুর। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। এরই মধ্যে দেশে কয়েক বছরের তাপমাত্রার রেকর্ডও ভঙ্গ হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। মানুষের সঙ্গে কষ্ট বেড়েছে পশু-পাখিদেরও। এ অবস্থায় বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ ও মোনাজাত করেছেন মুসল্লিরা।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে রংপুর নগরীর সাতমাথা বালাটারীর ওমর আলী মডেল হিফজুল কুরআন মাদরাসা মাঠে ইসতিসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজে ইমামতি করেন মাদরাসার মুহতামিম আরাফাত হোসাইন বিপ্লবী।
নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি পেতে অশ্রুভেজা চোখে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন মুসল্লিরা।
নামাজ ও মোনাজাত শেষে আরাফাত হোসাইন বিপ্লবী বলেন, বিশ্বনবীর (সা.) যুগে যখন অনাবৃষ্টি হতো তখন সবাইকে নিয়ে তিনি খোলা মাঠে চলে যেতেন। এরপর মহান আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফের প্রার্থনার পাশাপাশি বৃষ্টির জন্য দোয়া করতেন। এটা একটা সুন্নাহ। সেই অনুযায়ী সালাতুল ইসতিসকার আয়োজন করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দেখানো মতেই আমরা আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চেয়ে বৃষ্টি কামনা করেছি।
তিনি আরও জানান, আমরা ভয়াবহ দাবদাহ থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে তার রহমতের বৃষ্টি চেয়েছি। আমাদের মাতৃভূমিকে সকল মহামারি থেকে আল্লাহ যেন রক্ষা করেন এজন্যও আমরা অশ্রু ভেজা নয়নে দোয়া করেছি।
নামাজে অংশ নেওয়া মাওলানা আব্দুর রহমান জানান, ওলামায়ে কেরামসহ সাধারণ জনসাধারণ বৃষ্টির জন্য এই বিশেষ নামাজ ও মোনাজাতে অংশ নেন। কারণ অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ ও প্রাণিকুল খুবই কষ্ট পাচ্ছে। ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই এ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করা হয়। সবাই অশ্রুসিক্ত চোখে আল্লাহকে ডেকেছেন। নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেবেন।
এদিকে রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, রংপুর জেলায় আজ ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। গতকাল ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দিনাজপুরে ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং নীলফামারীর ডিমলায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবারের তুলনায় আজ বিভাগের বিভিন্ন জেলায় দাবদাহ বেড়েছে।