আমানতের সুদ মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম, তাই অনেকেই ব্যাংকে টাকা রাখছেন না। ফলে ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে, সেই হারে আমানত পাচ্ছে না। তারল্য সংকটে পড়ে দৈনন্দিন টাকার চাহিদা মেটাতে অনেক ব্যাংক চড়া সুদে ধার নিয়ে চলছে।
ব্যাংকাররা জানান, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশ্ব অর্থনীতির নানা সংকট দেখিয়ে ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব সুযোগ নিয়ে ব্যাংকগুলোর অনেক বড় বড় গ্রাহক বছরের পর বছর ঋণ বাড়াচ্ছে কিন্তু টাকা ফেরত দিচ্ছে না। আবার অনেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও নানা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করে দিচ্ছে। এতে করে ব্যাংক থেকে যেভাবে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে সেই হারে ফেরত আসছে না। আবার আমানতের সুদ এখন মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম বলে অনেকেই ব্যাংকেও টাকা রাখছেন না। নগদ প্রবাহে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে অর্থাৎ তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় গ্রাহকের আমানতের অর্থ ফেরতসহ দৈনন্দিন টাকার চাহিদা মেটাতে গিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে ধার করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে ১৭টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৩টি নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে ঋণের মেয়াদ ছিল সাত দিন। একদিন মেয়াদি ধার নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হয় ১৩ ব্যাংক। এখানেও ৭ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা ধার দিয়েছে সংস্থাটি। আরও একটি ব্যাংককে এক দিন মেয়াদি বিনিয়োগ সুবিধাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ১৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা ধার দিয়েছে ওই দিন। এই মুহূর্তে সাত দিন মেয়াদি রেপো রেট বা ঋণের সুদ হার ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। সাত দিনের অধিক মেয়াদি সুদের হার ৭ দশমিক ৭৫ এবং একদিন মেয়াদি তারল্য সহযোগিতার জন্য ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ গুণতে হচ্ছে। তারপরও নিরুপায় হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছেই যাচ্ছে ব্যাংকগুলো।