অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হাইড্রোগ্রাফির অবদান তাৎপর্যপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হাইড্রোগ্রাফির তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। সুনীল অর্থনীতিকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে হাইড্রোগ্রাফি পেশার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে মঙ্গলবার দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৩’ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বাংলাদেশ নৌবাহিনী দিবসটি উদযাপনের আয়োজন করায় প্রধানমন্ত্রী এর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘হাইড্রোগ্রাফি-আন্ডারপিইনিং দ্য ডিজিটাল টুইন অব দ্য ওশান’, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি মনে করেন প্রতিপাদ্যটি বর্তমান সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ধারণার সমার্থক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হাইড্রোগ্রাফির তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস’ উদযাপনের মাধ্যমে হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকাণ্ড ও সমুদ্র বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক দেশের জনগণের সামনে সহজভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে দেশের সমুদ্র এলাকা ও সমুদ্রসম্পদের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। তিনি ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস্ অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস্ অ্যাক্ট-১৯৭৪’ প্রণয়ন করেন, যা ছিল আমাদের সমুদ্র এলাকার ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরই ধারাবাহিকতায়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সামুদ্রিক বিরোধ মিটিয়ে বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার ওপর বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালে আমরা ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস্ অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস্ অ্যাক্ট-১৯৭৪’ কে সংশোধন ও হালনাগাদ করি। বঙ্গোপসাগরের সুবিশাল নতুন এই সমুদ্র এলাকা এবং এর অযুত সম্পদ আমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলার প্রয়াসে বর্তমান সরকার সুনীল অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়েছে।

সমুদ্র তলদেশের বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিস নিরলস কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০১০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে নৌবাহিনীর জন্য প্রথম হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে জাহাজ সংগ্রহ করি। ২০২০ সালে দেশীয় প্রযুক্তিতে স্থানীয়ভাবে তৈরি আরো দুইটি কোস্টাল সার্ভে জাহাজ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। এছাড়া নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়াসে যুগোপযোগী প্রযুক্তি, জাহাজ, এয়ারক্র্যাফট, ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ভেসেল সংযুক্ত করাসহ ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। নৌবাহিনীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকাণ্ড ও প্রশিক্ষণের মান সারাবিশ্বে স্বীকৃত।

তিনি বলেন, আমরা সমুদ্র ও হাইড্রোগ্রাফির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে নেতৃত্বশীল ভূমিকা রেখে চলেছি। আমার প্রত্যাশা, দেশের সীমিত সম্পদ ও কষ্টার্জিত অর্থকে কাজে লাগিয়ে নৌসদস্যরা মাতৃভূমির জন্য সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাবেন। সুনীল অর্থনীতিকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে হাইড্রোগ্রাফি পেশার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আমি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। তার দৃঢ় বিশ্বাস, সুনীল অর্থনীতির সব সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে সক্ষম হবেন। বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

আপনার মতামত প্রকাশ করুন

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ