পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার শোয়েব আখতার ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন অনেকদিন হলো, তাই ২২ গজে গতির ঝড় এখন আর তোলা হয় না তার। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে মাঠের বাইরে কথার ফুলঝুরি ছুটিয়ে আলোচনার জন্ম দেওয়ার দিক দিয়ে এখনো তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে। আইপিএল নিয়ে এক আলোচনায় সম্প্রতি এই পেসার বলেছেন, তার সময়ে যদি বিরাট কোহলি খেলতেন, তাহলে নাকি বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার এত রান করতেই পারতেন না, তার সেঞ্চুরির সংখ্যাটাও নাকি ৭০ এর চেয়ে অনেক কম হতো।
শোয়েব আখতারের ক্যারিয়ারের যখন পড়ন্ত বিকেল, তখনই বিশ্ব ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটে কোহলির। তাই এই ভারত-পাকিস্তানের এই দুই মহারথীর ক্রিকেট মাঠে সরাসরি মোকাবিলা হয়নি কখনোই। অবশ্য এখন থেকে এক যুগ আগে ২০১০ সালে শ্রীলংকার ডাম্বুলায় এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে একবার হতে পারত দুই সময়ের দুই সেরার দ্বৈরথ। কিন্তু সেই ম্যাচ আখতার বোলিংয়ে আসার আগেই সাইদ আজমলের বলে আউট হয়ে যান কোহলি, তাই সেবার এই দুই মহারথীর লড়াই দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
বিষয়টি নিয়ে ২০১৭ সালে ‘ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়নস’ নামের এক অনুষ্ঠানে নিজের আক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন কোহলি, ‘আমি কখনো শোয়েব আখতারের বিপক্ষে খেলিনি, তবে ডাম্বুলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সময় তাকে দেখেছিলাম। আমি আগেই আউট হয়ে গিয়েছিলাম, তাই তার বিপক্ষে ব্যাটিং করা হয়নি। তবে আমি তাকে বোলিং করতে দেখেছি, ক্যারিয়ারের শেষের দিকেও তার বোলিং অনেক ভয়ংকর মনে হচ্ছিল। তার (শোয়েব আখতার) সেরা সময়ে আমার মনে হয় না কোন ব্যাটার তাকে খেলতে চাইত।’
কোহলি সেই সাক্ষাৎকারে তাকে প্রশংসায় ভাসালেও সম্প্রতি ‘স্পোর্টসকিড়া’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শোয়েব আখতার কিছুটা খোঁচার সুরেই সেই প্রশংসার উত্তর করলেন, ‘কোহলি ভাল মানুষ এবং বড় ক্রিকেটার, তার কাছ থেকে আপনি ভালো কথাই আশা করবেন, আর সেটার জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আমি যদি কোহলির বিপক্ষে খেলতাম ও এত রান করতে পারত না। তবে ও অনেক রান করেছে, যা অবশ্যই অসাধারণ। লড়াই করেই তাকে রানগুলো করতে হয়েছে। আমার বিপক্ষে খেললে ও সর্বোচ্চ ২০/২৫ টা সেঞ্চুরি করতে পারত, এর বেশি না। তবে সেই সেঞ্চুরিগুলো দেখার মতো হত। আমি কোহলির সেরাটা বের করে আনতে পারতাম।’
৪৫৮ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ৭০ সেঞ্চুরি এবং ১২২ হাফ সেঞ্চুরির মালিক কোহলির এখন পর্যন্ত মোট আন্তর্জাতিক রান ২৩৬৫০। কোহলির এই রানের রেকর্ড যে তার ‘সেরা’র চেয়েও বেশি কিছু হওয়ার সাক্ষ্য দেয় তা বলাই বাহুল্য।