ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর জন্য একটি ‘ইউনিক আইডি’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌলিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত সব তথ্য থাকবে। তবে যেসব শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ বা ছাড়াছাড়ি হয়েছে, তারা ইউনিক আইডির ডাটা এন্ট্রির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যায় পড়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রী জানান, এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে তাকে শিক্ষার্থী তথ্য ছক (ইউনিক আইডি) পূরণ করতে হবে। সেই ফর্মে মা এবং বাবার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, জন্ম নিবন্ধন নম্বরসহ আরও অনেক তথ্য লিখতে হয়।
তিনি জানান, তার বাবা-মায়ের ডিভোর্স হয়েছে প্রায় ১৫ বছর। তখন তার বয়স তিন মাস। তখন থেকেই মায়ের সঙ্গে থাকে। যে কারণে তার কাছে বাবার এনআইডি নম্বর বা জন্মনিবন্ধন নম্বর নেই। পরিবারের পক্ষ থেকে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ তথ্যগুলো দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
ওই ছাত্রী জানান, স্কুল থেকে জানিয়ে দিয়েছে, বাবা-মার সব তথ্য না দিলে হয়ত এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না। এটা শোনার পর থেকে মা-মেয়ে ভেঙে পড়েছেন।
এ বিষয়ে ব্যানবেইসের আইইআইএমএস প্রকল্পের উপ-পরিচালক ড. মো. নাসির উদ্দিন গনি বলেন, আমরা ইউনিক আইডির কাজটা যতটা সহজ করা যায়, সেই চেষ্টাই করেছি। আমাদের ওয়েবসাইটের নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলা আছে, যেসব শিক্ষার্থীর বাবা-মা দুজনই আছে, তারা দুজনের এনআইডি নম্বর দেবে। যাদের বাবা আছে তারা বাবার, যাদের মা আছে তারা মায়েরটা দেবে। মোট কথা একজনের দিলেই হবে। আর যাদের বাবা-মা দুজনের কেউই নেই, তারা যেকোনো একজন আত্মীয়ের এনআইডি নম্বর দিলেই হবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রশিক্ষণের সময় বারবার শিক্ষকদের বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তাদের মনোযোগের ঘাটতি ছিল। তা না হলে ইউনিক আইডির রেজিস্ট্রেশনে বাবা-মা দুজনের এনআইডি নম্বর না দিলে শিক্ষার্থীরা বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না, এমন ভুল তথ্য দিতেন না।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ইউনিক আইডি তৈরি কাজ কিছুটা পিছিয়ে গেলেও এখন তা আবার পুরোদমে চলছে। এর অংশ হিসেবে ইউনিক আইডির সফটওয়্যারে শুরু হয়েছে ডাটা এন্ট্রির কাজ।
ব্যানবেইস বাস্তবায়নাধীন ‘স্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশনাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ প্রকল্পের আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ- দ্বাদশ শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল ডাটাবেইজ তৈরি ও ইউনিক আইডি প্রদানের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে তথ্য ছক পূরণের কার্যক্রম চলমান আছে।