ডারবান টেস্টের প্রথম দিনটা সে অর্থে নিজেদের করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। টস জয়ের ফায়দা কাজে লাগাতে ব্যর্থ টাইগার পেসাররা। ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৩৩ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সফরকারী দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর চোখে, যা ছিল দুই দলের ‘সমান’ অবস্থান। আজ শুক্রবার সকালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রত্যাশা ছিল সফরকারী দলের। বোলাররা সেই পরিকল্পনায় সফল। ৩৬৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন স্বাগতিকদের।
প্রথম দিনের খেলা শেষে ডমিঙ্গো বলেছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব আটকাতে চান প্রতিপক্ষে। বাংলাদেশি বোলাররা সে পথেই হাঁটলেন। ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে মাত্র ১৩৪ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের ঘরের মাঠে প্রথম ইনিংসে ৩৬৭ রানে অলআউট করে তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, খালেদরা যেন জানান দিলেন, কেন তাদের নিয়ে আতো আলোচনা চারিদিকে।
স্বাগতিক শিবিরের ব্যাটিং অর্ডারের মেরুদণ্ড দ্বিতীয় দিনের সকালেই ভেঙে দেন সফরকারী বোলাররা। গলার কাটার মতো বিঁধে থাকা টেম্বা বাভুমাকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭ রানের আক্ষেপে পুড়ে ৯৩ রানে বিদায় নেন তিনি। আগের দিনের ২৭ রানে অপরাজিত কাইল ভেরেইনা আজ আউট হয়েছেন তার সঙ্গে মাত্র ১ রান যোগ করে, অর্থাৎ ২৮ রানে। সব শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান কেশভ মহারাজ ১৯ রানে বিদায় নেন। এতে বড়ে সংগ্রহের স্বপ্নে ভাটা পড়ে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার।
৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রানের সংগ্রহ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষ করে প্রোটিয়ারা। লিজাড উইলিয়ামস ৬ এবং সিমন হারমার ৮ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় সেশনের খেলা করেন। তাদের আগের সেশনের অবিচ্ছেদ্য ১৬ রানের জুটি বেশি বাড়তে দেননি খালেদ আহমেদ। ১২ রানে থাকা উইলিয়ামসকে ফেরান দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। তাতে অবশ্য ফিল্ডার জয়ের অবদান আছে ঢের। এই জুটি ভাঙে ৩৪ রানে।
৩৩২ রানে ৯ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা পরে সাড়ে তিনশ রানের কোটা পার করে লেজের দিকের দুই ব্যাটসম্যান হারমার আর ডুয়ান অলভিয়ারের ব্যাটে। শেষ দিকে বাংলাদেশ দলের জন্য অস্বস্তি হয়ে ওঠা দশম উইকেটে এই জুটি থেকে আসে ৩৪ রান। পরে অলভিয়ারকে ১২ রানে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের ইনিংস থামান মিরাজ। ৩৬৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস। ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন হারমার।
বাংলাদেশি পেসার খালেদ আহমেদ এমনিতে ছায়ায় পড়ে থাকেন তাসকিন, এবাদত, শরিফুল, রাহিদের। দেশের মাটিতে ৩ পেসার খেলানোর ভাবনা বিলাসিতার মতো। দেশের বাইরে ৩ পেসার খেলালেও সাইড বেঞ্চেই জায়গা হয় খালেদের। এবার শরিফুলের ইনজুরির ভাগ্যের দুয়ার খুলেছে তার। সুযোগ পেয়েই বাজিমাত ডানহাতি পেসারের। নিখুঁত লাইং-লেন্থ আর গতিতে নাকাল করেছেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। খালেদের ৪ উইকেটের সঙ্গে মিরাজ ৩টি এবং এবাদত নিয়েছেন ২ উইকেট।