সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সেন্ট্রাল হসপিটালের ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। সেখানে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক।
রোববার (১৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর নিপসমে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেন্ট্রাল হসপিটালে আমরা টিম পাঠিয়েছিলাম, কী কী জিনিসের ঘাটতি ছিল সেখানে গিয়ে তারা সার্বিক অবস্থা দেখেছে। অপারেশনসহ কিছু কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে পর্যন্ত তাদের ঘাটতিগুলো পূরণ না হবে সে পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, সেন্ট্রাল হসপিটালের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এখন তো বিষয়টি পুরোপুরি আইনের হাতে চলে গেছে। এখন যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটা আইনানুযায়ী নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রোববার (১৮ জুন) দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখি।
জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হসপিটালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত শুক্রবার (৯ জুন) রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় আঁখিকে। তখন ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন।
এ বিষয়ে আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী বলেন, আমার স্ত্রীকে যখন ওটিতে ঢোকানো হয় এবং নরমাল ডেলিভারির জন্য চেষ্টা শুরু করা হয়, তখনও আমি সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে আছেন কি না জানতে চাই। কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরে জানতে পেরেছি ডা. সংযুক্তা সাহা ছিলেন না এবং তারা রোগীর কোনোরকম চেক-আপ ছাড়াই ডেলিভারির কাজ শুরু করে দেন।
এদিকে, ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার ধানমন্ডি থানায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র একটি মামলা দায়ের করেন ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।