বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিইদোতে গত ২৪ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর ৮ম সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ১২ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
সেই সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিজিবি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ওই সম্মেলনে আমার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এবং অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
অপরদিকে ডেপুটি চিফ অব মিয়ানমার পুলিশ ফোর্সের পুলিশ মেজর জেনারেল অং নেইং থুর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে।
তাদের দলে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও সে দেশের প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং অভিবাসন ও জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
সম্মেলনের সূচনা বক্তব্যে মিয়ানমার পুলিশ ফোর্সের (এমপিএফ) ডেপুটি চিফ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ ও আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান। তিনি বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব বজায় রেখে এবং একে অপরের মধ্যে যাতে কোনো মতানৈক্য সৃষ্টি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে সীমান্ত সমস্যাগুলো সমাধানের সদিচ্ছা প্রকাশ করেন।
তিনি ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত চুক্তি-১৯৮০’-এর প্রতি মিয়ানমারের অটল অবস্থানের কথা ব্যক্ত করে মাদক পাচার ও সীমান্ত পারাপার রোধসহ বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য হুমকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুনরায় উভয় বাহিনীর মধ্যে সমন্বিত টহল শুরু করার বিষয়ে তাগিদ দেন।
তিনি সম্মেলনের আয়োজনে অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সম্মেলনটিকে বিজিবি এবং বিজিপির (এমপিএফ) মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাইলফলক অর্জন বলে অভিহিত করেন। সম্প্রতি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তে সৃষ্ট উত্তেজনাকর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিজিপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদকের প্রবাহরোধ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ মোকাবিলায় উভয় বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বিজিপির অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করা হয় সম্মেলনে।
এছাড়াও বিজিবি মহাপরিচালক বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতীয় উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং মিয়ানমারের পক্ষ থেকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।